যুক্তরাজ্যে ক্রমেই শিথিল হচ্ছে করোনাভাইরাসের জন্য দেয়া লকডাউন। এ প্রক্রিয়ারই অংশ হিসেবে ইংল্যান্ডে সোমবার পাব ও সেলুনগুলো খুলে দেয়া হয়।
ইংল্যান্ডে জানুয়ারির গোড়ার দিকে এ লকডাউন কার্যকর হয়। গত বছর করোনাভাইরাস দেশজুড়ে যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাজ্যের বাকি অংশগুলোতেও এই লকডাউন দেয়া হয়। ওই সময়ই দক্ষিণ পূর্ব ইংল্যান্ডে করোনাভাইরাসের অধিক সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন ধরন ছড়াতে শুরু করে।
ইউরোপে এ ভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে যুক্তরাজ্যেই। দেশটিতে নিশ্চিত মৃত্যুর সংখ্যা এক লাখ ২৭ হাজারের বেশি।
এই লকডাউন এবং গণটিকা কার্যক্রমের কারণে যুক্তরাজ্যে সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু–সবই কমেছে। দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৬০ শতাংশ এরই মধ্যে অন্তত এক ডোজ টিকা নিয়েছেন।
তবে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও মহামারি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, এখনও বহু মানুষ টিকা নেননি। সামাজিক দূরত্ব রক্ষার বিধানও তারা মানছেন না। অনেকেই এই গ্রীষ্মে বিদেশে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর আশঙ্কা, এদের কারণেই আবার সংক্রমণ তীব্রতর হবে।
সরকারের নিউ অ্যান্ড ইমার্জিং রেসপিরেটরি থ্রেট অ্যাডভাইসারি গ্রুপের প্রধান পিটার হর্বি বলেন, যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি স্পষ্ট স্থিতিশীল হচ্ছে। তবে মানুষকে মনে রাখতে হবে, সব জায়গার পরিস্থিতি এক নয়। বিশ্বজুড়ে মহামারি এখনও তাণ্ডব চালাচ্ছে।
টাইমস রেডিওকে তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বহু দেশে এখনও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাদের নতুন করে আবারও লকডাউন দিতে হচ্ছে। কাজেই আগামী কয়েক মাসে কী ঘটতে চলেছে সে ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করা সহজ নয়।
সোমবার থেকে সেলুন, জিম এবং পাব ও রেস্তোরাঁর আউটডোর সেবা খুলে দেয়া হয়েছে। তবে পাব বা রেস্তারাঁর ভেতরে বসে খাওয়া-দাওয়া করার অনুমতি ১৭ মের আগে পাওয়া যাবে না। সিনেমা, থিয়েটার, নাইটক্লাবসহ বাকি বিনোদন কেন্দ্রগুলো আপাতত বন্ধই থাকছে। সামাজিক মেলামেশা কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে এবং বিদেশে ছুটি কাটানোর বিষয়টিও নিষিদ্ধ থাকছে।
খুচরা বিক্রেতা এবং সেবা খাতের জন্য লকডাউন শিথিল হওয়া সুসংবাদ। যদিও স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হতে এখনও অনেক দেরি। ব্রিটিশ বিয়ার ও পাব অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবমতে, ইংল্যান্ডের ৪০ শতাংশ পাবের আউটডোর সেবা প্রদানের সক্ষমতা রয়েছে।
শুধু ইংল্যান্ডের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে । যুক্তরাজ্যের বাকি অংশ—স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। তারা নিজেদের সুবিধামতো সিদ্ধান্ত নেবে।