মুখে কালো মাস্ক, হাতে রংতুলি। একের পর এক ছবি আঁকলেন তিনি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বসে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার পালন করেন একক প্রতিবাদ কর্মসূচি। সাড়ে তিন ঘণ্টা হুইল চেয়ারে বসে তিনি ছবি এঁকে বাড়ি ফিরে যান। এরপর নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হলে রাতেই তার নির্বাচনী প্রচারনায় নামার কথা।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে চলছে তুমুল আলোড়ন। মমতার নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় বহাল থাকতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভোটের জন্য দিনরাত প্রচারনা চালাচ্ছেন নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ জয়ের চেষ্টায়।
আট পর্বে চলমান ভোট নিয়ে উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ। এরই মাঝে গত ৩ এপ্রিল হুগলির তারকেশ্বরে প্রচারনাকালে মমতা সংখ্যালঘু মুসলিমদের ভোট অন্য দলের সঙ্গে ভাগাভাগি না করার আহ্বান জানান। মমতার এ বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে উল্লেখ করে নোটিশ দেয় নির্বাচন কমিশন। অন্যদিকে নির্বাচনি সহিংসতায় পাঁচ জন নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়েও মমতার দেয়া বক্তব্যে নোটিশ পাঠায় কমিশন। মমতাকে একদিনের জন্য নির্বাচনি প্রচারনায় নিষিদ্ধ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনিল অরোরা। নিজ দায়িত্বের শেষদিনে সোমবার তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ কঠোর আদেশ দেন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মঙ্গলবার দিনভর প্রচারনা থেকে সরে দাঁড়ান মমতা।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানলেও তাদের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরনায় (প্রতিবাদী অবস্থান) বসেন। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা তিনি সেখানে অবস্থান করেন। হুইল চেয়ারে বসে তিনি একমনে ছবি আঁকেন। এরপর বাড়ি ফিরে যান। তার আগে সাংবাদিকদের তিনি ছবিগুলো দেখান। মমতার আঁকা ছবি দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
নিষেধাজ্ঞা শেষের পর রাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনী প্রচারনা সভায় যোগ দেবেন বলে তৃণমূল নেতাকর্মী দাবি করেছেন। মঙ্গলবার চারটি জনসভা করার প্রস্তুতি থাকলেও নিষেধাজ্ঞার কারণে দুটি স্থগিত করা হয়।