নতুন ও অত্যাধুনিক পারমাণবিক সেন্ট্রিফিউজ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারের অধীনে পাঁচ পরাশক্তির ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তিতে ফেরা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই তেহরানের এ পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে শর্ত লঙ্ঘন হিসেবে।
শনিবার ১৫তম পরমাণু দিবস উদযাপন করে ইরান। এ উপলক্ষে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ ঘোষণায় বলা হয় আইআর-নাইন সেন্ট্রিফিউজ চালু করার কথা।
দেশটিতে বর্তমানে চালু থাকা অন্যান্য সেন্ট্রিফিউজের তুলনায় নতুন সেন্ট্রিফিউজ আরও দ্রুত কাজ করবে। ফলে একই সময়ে অধিক ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে সহায়ক হবে আইআর-নাইন।
বলা হচ্ছে, ইরানের প্রথম সেন্ট্রিফিউজ আইআর-ওয়ানের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি শক্তিশালী নতুন আইআর-নাইন।
পুরোনো সেন্ট্রিফিউজ আইআর-সিক্সের পরিধি সম্প্রসারণ ও আইআর-এইট আধুনিকায়নেরও ঘোষণা দিয়েছে তেহরান।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন
জানুয়ারি থেকে বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা বাড়িয়ে ২০ শতাংশে উন্নিত করে ইরান; যার মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনে প্রাথমিক সক্ষমতা অর্জনে আরও অগ্রসর হয় দেশটি।
সে সময় ইরানে বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ ছিল ১৭ কেজি। সাড়ে তিন মাসে এ পরিমাণ বেড়ে ৫৫ কেজি হয়েছে।
আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইসরায়েলের দাবি, পারমাণবিক অস্ত্র, ব্যালিস্টিক মিসাইলসহ বিধ্বংসী প্রযুক্তি চালিয়ে যাচ্ছে ইরানের সরকার।
যদিও এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তেহরানের দাবি, জ্বালানি খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়াসহ শান্তিপূর্ণ লক্ষ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন নয়, লক্ষ্য বিদ্যুৎসহ অন্যান্য বেসামরিক খাতের উন্নয়ন।
পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন থেকে ইরানকে বিরত রাখতে ২০১৫ সালে দেশটির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব। কয়েক দশকের আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় হয় ঐতিহাসিক চুক্তিটি।
পরে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র। তার অভিযোগ ছিল, গোপনে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে ইরান।
চুক্তি থেকে নাম প্রত্যাহারের পর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ তেহরানের বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন।
এর জেরে চুক্তিতে উল্লেখিত শর্তের বাইরে গিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি হাতে নেয় ইরান।