কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আগে ভারতীয়দের টিকা নিশ্চিত করে তবে করোনার টিকা রপ্তানিতে জোর দেয়া হোক।’
করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় কংগ্রেসশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে শনিবার ভার্চুয়াল বৈঠক করেন সোনিয়া গান্ধী।
তিনি মুখ্যমন্ত্রীদের আরও বেশি করে নমুনা পরীক্ষার পরামর্শ দেন। টিকাদান কর্মসূচিতে জোর দিতেও কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীদের আবেদন করেন তিনি। বলেন, ‘ভ্যাকসিন রপ্তানির দিকে জোর দেয়া হচ্ছে।’
একদিন আগে রাহুল গান্ধীও একই দাবি তুলেছিলেন। মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, রাজস্থানের মতো রাজ্যে সংক্রমণ বাড়ছে, তাই টিকা আরও প্রয়োজন বলে দাবি জানিয়েছে রাজ্যগুলি।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আরও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করতে চলেছে দিল্লি সরকার। কিন্তু পূর্ণ লকডাউনে ফিরবেন না কেজরিওয়াল সরকার। শনিবার এ অবস্থান স্পষ্ট করে জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘গত নভেম্বরে করোনার তৃতীয় ওয়েভের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে রাজ্য। সেই সময় প্রতিদিন সংক্রমণ ছিল প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। সেই সংক্রমণ প্রতিরোধে যে স্বাস্থ্যব্যবস্থা দিল্লির সরকারি হাসপাতালে বন্দোবস্ত করা হয়েছিল, এবারও সেই ব্যবস্থার আয়োজন করা হচ্ছে। লকডাউন বিকল্প নয়। দিল্লির মানুষকে সুরক্ষিত করতে আমরা আরও কড়া করোনা বিধি চালুর পথে হাঁটব।’
যত দিন গড়াচ্ছে, ততই করোনা যেন গ্রাস করছে ভারতকে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণের গ্রাফ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭৯৪ জনের, যা রেকর্ড তৈরি করেছে দেশে। করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখের গন্ডি পেরিয়েছে। কিন্তু প্রথম পর্যায়ে এত আক্রান্ত হয়নি, যত আক্রান্ত হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা হানায়।
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৩২ লাখ ৫ হাজার ৯২৬ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ কোটি ১৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৫৯ জন। আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার অনেকটাই কম।
দেশে এখন সক্রিয় কেসের সংখ্যা ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৩১। এখন পর্যন্ত দেশে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৬ জনের। সবচেয়ে চিন্তার পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রে। গত ১৫ দিনে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
এদিকে শনিবারই রাষ্ট্রীয় সমাজসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতের করোনা আক্রান্তের খবর জানা গিয়েছে। কলকাতাও দুচিন্তা
বাড়াচ্ছে। নির্বাচনি এ রাজ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা মহানগরে এক লাফে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৯৮৭ হয়েছে। সংক্রমিত ও মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্যে।