নারী ভোটারদের হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য তিনি দায়ী করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশকে। বিজেপি নেতা অমিত শাহ নানা অনিয়মের হোতা বলে অভিযোগ মমতার।
চতুর্থ দফার ভোটের প্রচারে বুধবার মমতা ও অমিত শাহ পৃথক সমাবেশ থেকে একে অপরের সমালোচনা করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গে আগামী ২৯ এপ্রিল অষ্টম দফার ভোট গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হবে লড়াই। পশ্চিমবঙ্গে এটিই সবচেয়ে দীর্ঘ ভোটযাত্রা। যার শুরু হয়েছে গত ২৭ মার্চ।
তৃতীয় দফায় রাজ্যের ৩১টি কেন্দ্রে ভোট হয়েছে গত মঙ্গলবার। হাওড়া, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার এসব কেন্দ্রে ভোট নিয়ে মমতার রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। আর চতুর্থ দফার ভোট হবে শনিবার রাজ্যের চার জেলায়। হাওড়ার একটি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি, হুগলির একটি অংশে ভোট হবে এদিন। এছাড়া আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার ভোটগ্রহণ একই দিনে। মোট ৪৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হবে এদিন। এর আগে বুধবার কোচবিহারে নির্বাচনী প্রচার সভায় মমতা নানা অভিযোগ করেন। সেখানেই মঙ্গলবার জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বুধবার কোচবিহারে ভোট প্রচারনাকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা (সিআরপিএফ) অমিত শাহের নির্দেশে নারী ভোটারদের হয়রানি করছে। আগেরদিন সেখানে জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি নানা উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে ভোট প্রার্থনা করেন। অন্যদিকে একদিন পরই মমতা সেখানে পৌঁছে খারিজ করে দেন বিজেপি সরকারের ভূমিকা। সভায় মমতা তুলে ধরেন তার সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।
সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ভোটের সময় পুলিশ বিজেপি হয়ে যায়। তবে ছোট পুলিশের কোনো দোষ নেই। পুলিশের নেতারা সব আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে বসে আছেন। সিআরপিএফ-কে আমি সন্মান করি। ওরা আসল জওয়ান। কিন্তু যারা বিজেপির সিআরপিএফ, আমি তাদের সন্মান করি না। তারাই মহিলাদের হেনস্তা করছে, মানুষ মারছে। তারাই গন্ডগোল পাকাচ্ছে। তারা ভোটারদের ভোট দিতে দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাদেরকে এই নির্দেশ দিয়েছেন।‘
ভোটারদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘হেনস্তা হলে, পুলিশকে একদল ঘেরাও করে রাখবেন, আরেকদল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে ভোট নষ্ট করবেন না।‘
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘দয়া করে আপনারা নিশ্চিত করুন, ভোট চলাকালে কাউকে মরতে হবে না। আমি আপনাদেরকে সিআরপিএফ জোয়ানদের পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখার অনুরোধ জানাই, যারা এই রাজ্যে কর্তব্যরত। তাদেরকে মেয়েদের হয়রানি করার সুযোগ দেওয়া উচিত নয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা মেয়েদের উত্যক্ত করার ঘটনা কিন্তু ঘটছে।'
কোচবিহারের ভোটারদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আমি একা জিতে তো লাভ নেই। আমার ভোট হয়ে গেছে। আমি জিতবেই। আমি এখানে দাঁড়ালে আপনারা আমাকে ভোট দিতেন। কিন্তু আমি একা জিতে তো সরকার গঠন করতে পারব না। আমাদের ২০০ আসন পার করতে হবে।'
এদিকে বুধবার সিঙ্গুরে এক প্রচারনা সভায় অংশ নেন অমিত শাহ। সেখানে শিল্প উন্নয়নের সম্ভবনা ও বিজেপির পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন তিনি। মমতার কারণে সেখানে অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ভোটার হেনস্তা ও অনিয়ম নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর ধারাবাহিক অভিযোগ সম্পর্কে অমিত শাহ বলেন, ‘এতেই বোঝা যাচ্ছে, উনি হারছেন।'