সামরিক শাসনের পতন ও নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারে চলমান বিক্ষোভে কমপক্ষে আরও সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া চীনের মালিকানাধীন কারখানায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
দেশটির বিভিন্ন শহরে বুধবার এসব ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কেলে শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। ওই সময় তারা শান্তিতে নোবেলজয়ী নির্বাচিত নেতা অং সান সু চির বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছিলেন। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। আর বাণিজ্যিক শহর ইয়াঙ্গুনের কাছে বাগো শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও দুইজন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইয়াঙ্গুনে চীনের জেওসি গার্মেন্টস কারখানায় বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কেও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
এ ছাড়া ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, ইয়াঙ্গুনের আরেক এলাকায় চীনের পতাকা জ্বালিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের প্রতি পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে চীনের। তাই বিক্ষোভকারীদের রোষানল থেকে বাদ যাচ্ছে না চীনের বিভিন্ন স্থাপনাও। গত মাসে ইয়াঙ্গুনে চীনের বিনিয়োগ করা ৩২টি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে বুধবার এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন, দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের কারণে হাসপাতাল, স্কুল, অফিস-আদালত ও কারখানার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশীসহ অন্যান্য দেশে বিভিন্ন ইস্যুতে বিক্ষোভ চলছে। কিন্তু কোথাও ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর হামলা হচ্ছে না। এ আন্দোলন দেশকে ধ্বংস করার আন্দোলন।’
মিয়ানমারবিষয়ক অ্যাডভোক্যাসি গ্রুপ অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে সেনা ও পুলিশের গুলিতে ৫৮১ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশুও রয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার বিক্ষোভকারীকে। এদের মধ্যে ২ হাজার ৭৫০ জন এখনও কারাগারে।