সৌদি আরব ও ইসরায়েলের সর্ম্পকোন্নয়ন পুরো অঞ্চলের জন্য সামগ্রিকভাবে লাভজনক হবে। তবে এটি সম্ভব কেবল ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বৃহস্পতিবার সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন। তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য চুক্তি নির্ভর করছে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতির ওপর।
সাক্ষাৎকারে ১৯৬৭ সালের সীমানা মেনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই এক শর্তেই সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্কে গতি আনা সম্ভব। এটি হলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অগ্রগতি হবে।’
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌম রাষ্ট্র নিশ্চিতের শর্তে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছিল সৌদি সরকার।
গত ডিসেম্বর মাসে প্রিন্স ফয়সাল বলেছিলেন, সৌদি-ইসরায়েল সুসম্পর্ক চাইলে ফিলিস্তিনি জনগণের দাবি মেনে তাদের জন্য কার্যকর ও মর্যাদাপূর্ণ সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
সে সময় সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইছে বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিনিময়ে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্কে সুদিন চায় রিয়াদ।
প্রথম আরব রাষ্ট্র হিসেবে গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আব্রাহাম অ্যাকর্ড নামক যৌথ সমঝোতার ভিত্তিতে এই সম্পর্ক স্থাপিত হয়। আরব আমিরাতের পর আব্রাহাম অ্যাকর্ডে যুক্ত হয় বাহরাইন, মরক্কো ও সুদান।
এতদিন ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তিচুক্তি না হলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করার অবস্থানে ছিল মুসলিম রাষ্ট্রগুলো।
এর আগে ১৯৭৯ সালে মিসর প্রথম এবং তারপর ১৯৯৪ সালে জর্ডান দ্বিতীয় মুসলিম দেশ হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে।
একে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও ফিলিস্তিনের জনগণের পিঠে ছুরি দেয়া বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল দেশটির সরকার।
ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগে হওয়া যৌথ সমঝোতায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি নির্মাণের একটি পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে।
২০০২ সালে ‘আরব শান্তি উদ্যোগ’-এর প্রস্তাব দেয় সৌদি আরব। যার প্রতিফলন ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের দ্বিপাক্ষিক সমাধান। তাতে বলা হয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের সময় থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আরোপিত ইসরায়েলের দখলদারিত্ব প্রত্যাহার করতে হবে তেলআবিবকে। গোলান হাইটস, পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরসহ অবরুদ্ধ সব অঞ্চল থেকে অবরোধ তুলে নিতে হবে। তা হলেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেবে অন্যান্য আরব রাষ্ট্র।
অনেক বছর ধরে এ প্রস্তাবে আরব লীগ সম্মতি জানিয়ে গেলেও কখনোই এটি কার্যকর হয়নি। উল্টো পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবরুদ্ধ অঞ্চলগুলোতে দখলদারিত্ব ও অবৈধ বসতি নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।