বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

২০২০ সালে জাকাত পেয়েছেন ২১ লাখ শরণার্থী

  •    
  • ২ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:৫৭

জাকাতের অর্থ সংগ্রহে গত বছর পবিত্র রমজান মাসে ‘এভরি গিফট কাউন্টস’ শিরোনামে সারা বিশ্বেই একটি কর্মসূচি চালায় ইউএনএইচসিআর। এতে সাড়া দেন বিভিন্ন দেশের ৪১ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া ‘গিভজাকাত’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপও চালু করে ইউএনএইচসিআর, যার মাধ্যমে নিজেদের প্রদেয় জাকাতের পরিমাণ হিসেব ও দ্রুত দান করতে পারেন ব্যবহারকারীরা।

জাকাতের অর্থে গঠিত তহবিল থেকে রেকর্ডসংখ্যক শরণার্থী সহায়তা পেয়েছেন গত বছর। ২০২০ সালে ছয় কোটি ১৫ লাখ ডলারের সংগৃহীত জাকাত পৌছেছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শরণার্থী হিসেবে বসবাসরত প্রায় ২১ লাখ মানুষের কাছে।

জাকাতের অনুদান সবচেয়ে বেশি পেয়েছেন বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও মধ্যপ্রাচ্যের সিরীয় ও ইয়েমেনী শরণার্থীরা।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে এ তথ্য।

সংস্থাটির ‘ইসলামিক ফিলানথ্রপি: ট্রান্সফর্মিং দ্য লাইভস অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস ডিসপ্লেসড’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় বৃহস্পতিবার। এতে বলা হয়, আগের চার বছরের তুলনায় গত বছর জাকাত তহবিলে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ ছিল কয়েক গুণ বেশি।

২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে ধর্মীয় রীতি মেনে সচ্ছল মুসলিমদের দান করা অর্থ থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন ৩৪ হাজারের বেশি শরণার্থী।

অন্যদিকে শুধু ২০২০ সালেই জাকাত ও সদকাসহ ইসলাম ধর্মে বর্ণিত বিভিন্ন উপায়ে সংগৃহীত ধর্মীয় অনুদানে উপকৃত হয়েছে ভিটেমাটিহীন ২১ লাখ মানুষ।

জাকাত হলো ইসলাম ধর্মের জীবনবিধানে উল্লেখিত এক ধরনের কর ব্যবস্থা। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম এটি, যা সচ্ছল মুসলিমদের জন্য নামাজের সমতুল্য। ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী সচ্ছল মুসলিমদের সঞ্চয়ের আড়াই শতাংশ দরিদ্রদের জন্য প্রতি বছর জাকাত হিসেবে দান করতে হয়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে জাকাতের অনুদান সাড়ে ১২ শতাংশ বেশি ছিল। ফলে বাড়তি অর্থে অতিরিক্ত বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষ লাভবান হয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে জাকাতের উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৫৯ শতাংশ।

গত বছর ১০টি মুসলিম দেশে জাকাত সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জাতিসংঘ। এসব কর্মকাণ্ডের ২০ শতাংশ খরচও মিটিয়েছে জাকাতের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থেই।

ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে শরণার্থী ও নিজ দেশেই অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের অর্ধেকই মুসলিম দেশগুলোর সহযোগিতামূলক জোটের (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর নাগরিক। করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে আশ্রয়হীন এসব মানুষের বেঁচে থাকা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দারিদ্র্য, সংঘাত, রাজনৈতিক সংকট, গৃহযুদ্ধ, বহিঃশক্তির আক্রমণ, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা কারণে বিশ্বজুড়ে আশ্রয়হীন প্রায় আট কোটি মানুষ।

ওআইসি’র সদস্য দেশগুলোতে রাজনৈতিক সংকটের ক্ষত বাড়তে থাকলেও ইসলামিক অনুদানও বাড়ছে বলে কোটি গৃহহীন মানুষ উপকৃত হচ্ছেন বলেও উল্লেখ করা হয় জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।

জাকাতের অর্থ সংগ্রহে গত বছর পবিত্র রমজান মাসে ‘এভরি গিফট কাউন্টস’ শিরোনামে সারা বিশ্বেই একটি কর্মসূচি চালায় ইউএনএইচসিআর। এতে সাড়া দেন বিভিন্ন দেশের ৪১ হাজারের বেশি মানুষ।

এ ছাড়া ‘গিভজাকাত’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপও চালু করে ইউএনএইচসিআর, যার মাধ্যমে নিজেদের প্রদেয় জাকাতের পরিমাণ হিসেব ও দ্রুত দান করতে পারেন ব্যবহারকারীরা।

শরণার্থীদের জন্য জাকাত দেয়ার ধর্মীয় বিধান নিয়ে সচ্ছল মুসলিমদের দ্বিধা দূর করতে ইসলামিক শিক্ষাবিদদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছে ইউএনএইচসিআর।

২০২১ সালে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, জর্ডান, লেবানন, ইয়েমেন, ইরাক, ইরান, মিসর, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া, বুরকিনা ফাসো ও সোমালিয়ার দুই কোটি ৪২ লাখ মানুষের সাহায্যার্থে ২৭০ কোটি ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। এ অবস্থায় চলতি বছর জাকাত বাবদ আরও বেশি অনুদান পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী সংস্থাটি।

এ বিভাগের আরো খবর