মিয়ানমারের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগের দাপ্তরিক গোপনীয়তা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চির বিরুদ্ধে। এটি প্রমাণিত হলে ১৪ বছর জেল হতে পারে সামরিক জান্তার হাতে বন্দি এ নেতার।
বৃহস্পতিবার সু চির বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী। এ নিয়ে মিয়ানমারের ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রধানের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনল মিয়ানমারের সেনা সরকার।
গত মাসের শুরুর দিকে সু চির বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক আমলের দণ্ডবিধির এক ধারায় অভিযোগ আনা হয়, যাতে ভীতি বা শঙ্কা সৃষ্টি অথবা জনগণের শান্তি বিঘ্ন হওয়ার মতো তথ্যের প্রকাশ নিষিদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ওই সময় টেলিযোগাযোগ আইনে আরেকটি অভিযোগ আনা হয় শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চির বিরুদ্ধে।
এর আগে মিয়ানমারের নির্বাচিত ওই নেতার বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে ছয়টি ওয়াকিটকি রেডিও আমদানি ও করোনাভাইরাসের প্রটোকল ভাঙার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
তবে আগের চারটি অভিযোগের চেয়ে সাম্প্রতিক অভিযোগ অনেক গুরুতর। কারণ এতে দোষী প্রমাণিত হলে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে সু চির।
সু চির প্রধান আইনজীবী খিন মং জো বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এক সপ্তাহ আগে সু চি, তার তিন পদচ্যুত মন্ত্রী ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টা শন টারনেলের বিরুদ্ধে ইয়াঙ্গুনের এক আদালতে অফিশিয়াল সিক্রেটস আইনে অভিযোগ আনা হয়। বিষয়টি দুই দিন আগে জানতে পারেন তিনি।
গত বছরের নভেম্বরে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ১ ফেব্রুয়ারি সু চি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই দিনই সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে ক্ষমতায় বসে দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। জারি করা হয় এক বছরের জরুরি অবস্থা।
ওই ঘটনার পর সেনাশাসনের পতন ও নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবিতে টানা আন্দোলন করে আসছে মিয়ানমারের আপামর জনসাধারণ।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারজুড়ে বৃহস্পতিবারও রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ওই সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রণীত সংবিধানের কপিও পোড়ায় আন্দোলনকারীরা। এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছে কমপক্ষে ৫৩৬ জন।