মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দুই মাসের আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। সোম ও মঙ্গলবার কমপক্ষে ১৬ জন বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন গত শনিবারের গোলাগুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১-এ দাঁড়িয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানে ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকেই গণবিক্ষোভ চলছে মিয়ানমারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন কৌশল হিসেবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের এ পর্যায়ে মিয়ানমারের রাস্তাঘাটে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ তৈরি করে রাখছেন সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীরা।
দেশটির সর্ববৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুনে বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে ময়লা পথে ফেলে রাখতে অনুরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ আহ্বানে সাড়াও দেন বাসিন্দারা।
মঙ্গলবারও দেশের বিভিন্ন শহরে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন হাজারও মানুষ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রাতভর গোলাগুলি চলেছে। বিক্ষোভ দমনে তুলনামূলক ভারী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করছে নিরাপত্তা বাহিনী।
নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ড বন্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সেনাবাহিনীর ওপর ঐক্যবদ্ধভাবে চাপ প্রয়োগে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আগ পর্যন্ত মিয়ানমারের সঙ্গে শুল্কমুক্ত আমদানি-রপ্তানিবিষয়ক একটি বাণিজ্যিক সমঝোতা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলমান সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্স।
সব পক্ষকে সহনশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মিত্র হিসেবে পরিচিত চীন। বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে রাশিয়া। যদিও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সুসম্পর্ক অব্যাহত থাকার কথাও জানিয়েছে দেশ দুটি।
সামরিক অভ্যুত্থান ও বিক্ষোভকারীদের ওপর শক্তি প্রয়োগের জেরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর আগেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তবে এখন পর্যন্ত এসব চাপের সামনে নতি স্বীকার করেনি মিয়ানমার সেনাবাহিনী।