ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল শোধনাগারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনের ব্যাপকতা এত বড় যে, দমকল কর্মীরা আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
দেশটির বালংগানে পার্টামিনা পরিচালিত ওই তেল শোধনাগারে স্থানীয় সময় রোববার রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে আগুন লাগে। আগুনে পাঁচজন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন।
তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেল শোধনাগারটি আবাসিক এলাকার ভেতরে হওয়ায় সেখান থেকে অন্তত ৯৫০ বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি।
পশ্চিম জাভা রাজ্যে তেল শোধনাগারে আগুল লাগার বেশ কিছু ভিডিও টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার সকালেও সেখানে ব্যাপক আগুন ও গাঢ় কালো ধোঁয়া দেখা গেছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি প্রথমে পোড়া গন্ধ পাই। সেটা এতই তীব্র ছিল মনে হচ্ছে নাকে কিছু একটা দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। এর পরপরই বিকট শব্দে একটা বিস্ফোরণ হয়।’
আঞ্চলিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানাচ্ছে, আগুনে পাঁচজন মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছেন। আরও অন্তত ১৫ জন অল্প পরিমাণে দগ্ধ হয়েছেন। তাদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শোধনাগারের আশপাশের বাসিন্দা যারা সে সময় রাস্তায় ছিলেন, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তাদের অনেকেই আহত হয়েছেন।
একটা বিপর্যয়
বালংগান তেল শোধনাগারটি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে রাজধানী জাকার্তা এলাকার প্রায় সব তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল সরবরাহ করা হয়।
সাধারণ জ্বালানি এবং প্লাস্টিক ও কেমিক্যাল ব্যবসায় কী প্রভাব ফেলতে পারে, এই দুর্ঘটনা তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও পার্টামিনা বলছে, সাধারণের জন্য জ্বালানি সরবরাহে কোনো প্রভাব পড়েনি এবং এখনও সরবরাহ অব্যাহত আছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল শোধনাগারটিতে কীভাবে এত বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা টেলিভিশনে এরই মধ্যে নানা ধরনের মত ব্যক্ত করেছেন। তাদের অনেকেই সরকারের অবহেলাকে দায়ী করছেন।
নেটিজেনরা সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের আহ্বান জানাচ্ছেন।
বালংগান তেল শোধনাগারটি রাজধানী জাকার্তা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ৩৪০ হেক্টর আয়তনের শোধনাগারটিতে প্রতিদিন ১ লাখ ২৫ হাজার ব্যারেল তেল প্রক্রিয়াজাত করা হয়।