মিয়ানমারে শনিবারের বিক্ষোভে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এ ঘটনাকে ‘ভয়াবহ’ উল্লেখ করে বলেন, গুটিকয়েকের স্বার্থরক্ষায় জান্তা সরকার সাধারণ মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সাহসী জনগণ সেনাবাহিনীর শাসন প্রত্যাখ্যান করেছে।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা করছে।
বিক্ষোভকারী নিহতের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্যও।
ইউরোপের প্রতিনিধিরা বলছেন, সশস্ত্র বাহিনী দিবস সন্ত্রাস ও অসম্মানের দিন হিসেবে মনে রাখা হবে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব একে বর্ণনা করেছেন ‘নতুন অবনতি’ হিসেবে। শনিবারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী অব্যাহত বিক্ষোভে শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৯১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। যদিও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা শতাধিক। এদের মধ্যে বেশ কিছু শিশুও রয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়ার পর একদিনে এটিই ছিল সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার ঘটনা।
বিবিসি জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে মিঙ্গিয়ান শহরে। সেখানে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৯ জন। দেশটির সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে প্রাণ গেছে অন্তত ২৪ জনের।
মিঙ্গিয়ানের বাসিন্দা থু ইয়া জো বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘পাখির মতো গুলি করে করছে তারা। এমনকি বাড়ির ভেতরে ঢুকে গুলি করছে সেনারা।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সুচিসহ তার নেতৃত্বাধীন সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর পর থেকেই সংকটে আছে দেশটি।
অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষক সংস্থা এএপিপি। অবশ্য ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগার থেকে চলতি সপ্তাহে ছয় শতাধিক বিক্ষোভকারী ছাড়া পেয়েছেন।
প্রায় দুই মাস ধরে চলা বিক্ষোভে নিহত হয়েছে চার শতাধিক মানুষ।