মিয়ানমারে ‘গণতন্ত্রের সুরক্ষার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হ্লাইং।
গত ১ ফেব্রুয়ারির সেনা-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাজপথে নিয়মিত বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শনিবার জাতীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান আবারও নির্বাচন দেয়ার কথা বলেন। তবে নির্বাচন কবে হতে পারে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।
এর আগে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শুক্রবার সেনাদের উদ্দেশে পৃথক দুটি বার্তায় বলা হয়েছিল, গুলি খাওয়ার ভয় থাকলেও রাস্তায় নামতে পারে বিক্ষোভকারীরা।
মিয়ানমারে সেনা-অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩২০ জনের বেশি নাগরিক প্রতিবাদ করতে গিয়ে গুলিতে নিহত হয়েছেন।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার দাবি, এই সংখ্যা জান্তা সরকার গোপন করছে। প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
এমন বাস্তবতায় সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাইং শনিবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের সুরক্ষায় জনগণের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করে যাব।
‘দেশের সুরক্ষা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য সহিংস কাজ করা উচিত নয়।’
বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে জয়ী নেতা অং সান সুচি ও তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্যাসি ‘বেআইনি কাজ’ করায় বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিয়েছে।
বক্তব্যে সেনাপ্রধান বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে হত্যার ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলতে চাননি। তবে বিক্ষোভ দমনে সেনাবাহিনীকে গুলি করার নির্দেশ দেননি, এমনটাও স্পষ্ট করে বলেননি।
এর আগে জান্তা সরকার বলেছিল, গুলি চালানো হয়েছে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে থেকেই।
‘রাশিয়া সত্যিকারের বন্ধু’
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের ভাষণে সেনাপ্রধান দেশটিতে ১৯৪৫ সালে জাপানের দখলদারত্বের কথাও স্মরণ করেন।
মিয়ানমারে প্রতিবছর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্যারেডে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক দেশের প্রতিনিধি অংশ নেন। এবার সেনা-অভ্যুত্থানের পর দিবসটির প্যারেডে একমাত্র রাশিয়ার উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্ডার ফোরম্যান অংশ নেন।
এ নিয়ে মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের সত্যিকারের বন্ধু।’
সেনা-অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ দেশটির বেশ কিছু কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সেই সঙ্গে দেশটিতে অবরোধ আরোপ করেছে দেশগুলো।
এমন প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা অনেক দেশের সঙ্গে বৈরিতা থাকা রাশিয়ার প্রশংসা করলেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান।
রাশিয়া ও মিয়ানমারের সম্পর্ক গত কয়েক বছরে অনেকটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মিয়ানমারের কয়েক হাজার সেনা সদস্যকে সম্প্রতি উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়েছে বৈশ্বিক পরাশক্তিটি।