সৌদি আরবের বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি ও তেলের কারখানায় সমন্বিত হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।
বৃহস্পতিবার দাম্মামের কিং আব্দুলআজিজ সেনা ঘাঁটি, নাজরান ও আসির এলাকায় অবস্থিত আরও দুটি সেনা ঘাঁটি এবং রাস তানুরা, রাবিগ, ইয়ানবু ও জিজান এলাকায় সৌদি আরামকোর কয়েকটি কারখানায় একযোগে চালানো হয় হামলা।
শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটি। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে হুতি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেন, ‘প্রতিটি লক্ষ্যে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছি আমরা। নিশ্চিত থাকুন যে সামনের দিনগুলোতে এর চেয়েও বেশি, আরও নিষ্ঠুর সামরিক অভিযান চালানো হবে।’
সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জিজানে তেল পরিশোধনাগার লক্ষ্য করে আটটি বোমারু ড্রোন ছুড়েছে হুতিরা। বৃহস্পতিবারের হামলায় অন্য সব এলাকায় ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করে দেয়া হলেও, জিজানের একটি ট্যাঙ্কারে আগুন ধরে যায়। তবে কেউ হতাহত হয়নি।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেলের কারখানা সৌদি আরামকোর নতুন একটি পরিশোধনাগার ও বন্দর ব্যবহারের সুবিধা আছে জিজানে। দিনে চার লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে জিজানে অবস্থিত পরিশোধনাগারটির।
সাম্প্রতিককালে আরামকোর কারখানা লক্ষ্য করে বেশ কয়েকবার হামলার চেষ্টা করেছে হুতিরা। সোমবার সৌদি আরবের অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব উপেক্ষা করে আক্রমণ আরও জোরদার করে হুতিরা।
সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, এ অবস্থায় তেল কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা করছে সৌদি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে হুতিদের বিরুদ্ধেও।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থিত ইয়েমেন সরকারের সমর্থনে সৌদি আরবের সামরিক অভিযান শুরুর ষষ্ঠ বছর পূর্ণ হয়েছে চলতি মাসে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান ও হুতি বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের; যাদের মধ্যে কমপক্ষে ১৩ হাজার বেসামরিক নাগরিক।
গৃহযুদ্ধ, সংঘাত ও বহিঃশক্তির আক্রমণে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশটি। অপুষ্টি ও নানা রোগে ভুগে মৃত্যুর মুখে কয়েক লাখ শিশু।
এ অবস্থায় গত মাসে ইয়েমেন ইস্যুতে সৌদি আরবকে সমর্থন ও অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করে মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।