টেলিযোগাযোগ, মাইনিং ও আবাসন প্রতিষ্ঠানসহ মিয়ানমার সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল ও গণতন্ত্রপন্থি মানুষের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগে এই পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়াশিংটন-লন্ডন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
মিয়ানমার ইকোনোমিক করপোরেশন (এমইসি) ও মিয়ানমার ইকোনোমিক হোল্ডিংস লিমিটেডকে (এমইএইচএল) নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে এসব প্রতিষ্ঠানের থাকা সব সম্পদ ‘জব্দ’ করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এমইএইচএলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্যও।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া জানায়নি মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ করে গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমার সামরিক বাহিনী। এর পর থেকে দেশটির লাখ লাখ মানুষ সেনাশাসনের অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন।
গৃহবন্দি নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি ও নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি করছেন তারা। অভ্যুত্থানবিরোধীদের এই বিক্ষোভ দেশটির বড় বড় শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এরপর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে অচলাবস্থার সূচনা হয়। প্রাত্যহিক বিক্ষোভ ও অবরোধের কর্মসূচির কারণে ব্যবসায়িক পরিবেশ রুদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অচল হয়ে গেছে দেশটির দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্যক্রম।
বিক্ষোভের প্রথম পর্যায়ে সামরিক বাহিনী সংযমের পরিচয় দিলেও গত মাসের শেষের দিক থেকে ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠতে থাকে। আন্দোলন দমনে রাবার বুলেট-জলকামান-টিয়ারশেলের পরিবর্তে প্রাণঘাতী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
মানবাধিকার সংস্থার বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া অভ্যুত্থানবিরোধী টানা এই বিক্ষোভে জান্তা সরকারের দমন-পীড়নে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৭৫ জন নিহত হয়েছেন।
সেনাপ্রধান জেনারেল মিং অং হ্লাইংসহ দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
মিয়ানমারের অর্থনীতির একটা বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির প্রভাবশালী সামরিক বাহিনী। তারা বিয়ার, সিগারেট উৎপাদন থেকে শুরু করে টেলিযোগাযোগ, টায়ার, খনিজসম্পদ ও রিয়েল এস্টেট খাতের সঙ্গে জড়িত।