যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের ক্ষমতা নেয়ার পর প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
দেশটির পশ্চিম উপকূলে গত সপ্তাহের শেষে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা।
উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি দীর্ঘদিনের। এ নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠকও করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সিঙ্গাপুরে হওয়া সে বৈঠকে বিষয়টির কোনো সুরাহা হয়নি।
পরমাণু কর্মসূচি চালু রাখার পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ জারি রেখেছে পূর্ব এশিয়ার দেশটি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ঘটনায় পিয়ংইয়ংকে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ দুই কর্মকর্তা ব্রিফিংয়ে অভিযোগ করেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া সক্রিয়ভাবে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের অন্য দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, উত্তর কোরিয়া একটি নয়, দুটি স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তারা।
ওহাইও সফরকালে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘আমরা জেনেছি, এখনও সেখানে (উত্তর কোরিয়া) কিছুই পরিবর্তন হয়নি।’
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ মঙ্গলবার জানান, উত্তর কোরিয়া রোববার পশ্চিম উপকূলে দুটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র সংবাদ সংস্থা ইয়ানহাপকে বলেন, ‘তারা (উত্তর কোরিয়া) যেটি উৎক্ষেপণ করেছে, সেটি ক্রুজ শ্রেণির ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক নয়।’
গত বছরের জুলাইয়ে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল উত্তর কোরিয়া। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের উত্তর-পূর্ব এশিয়া সফরের মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করল পিয়ংইয়ং।
যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে উত্তর কোরিয়াকে। বাইডেনের উত্তরসূরি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিনবার কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। কিন্তু তাদের তিনটি বৈঠকই ব্যর্থ হয়।
আলোচনার টেবিলে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কোনো সমাধান না হওয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের ওপর অবরোধ আরোপের দাবি জানিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সেসব হুমকিকে দৃশ্যত পাত্তা দিচ্ছে না উত্তর কোরিয়া।
গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ দুই মন্ত্রীর সফরের আগের দিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে উত্তর কোরিয়া। দেশটি দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার মধ্যে আমেরিকাকে ঝামেলাপূর্ণ আচরণ না করতে সতর্কবার্তা দেয়।
এমনকি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধেরও হুমকি দেয় দেশটি।