চীনে মাটি খুঁড়ে সন্ধান মিলেছে তিন হাজার বছরের পুরোনো একটি স্বর্ণের মাস্ক বা মুখোশের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে সদ্য আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি নিয়ে।
বিবিসি জানিয়েছে, সিচুয়ান প্রদেশের সানজিংদুইয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকায় সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া গেছে ব্রোঞ্জ যুগের পাঁচ শতাধিক নির্দশন। সেগুলোরই একটি এই মুখোশ, যার ৮৪ শতাংশই খাঁটি স্বর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খ্রিস্টপূর্ব ৩১৬ সালের আগেকার প্রাচীন শু প্রদেশের ইতিহাস আরো বিস্তারিত জানা যাবে এবার। প্রাপ্ত নতুন নিদর্শনগুলোই সাহায্য করবে এ কাজে।
গত শনিবার এই নতুন আবিষ্কৃত নিদর্শনগুলো প্রকাশ্যে নিয়ে আসে চীনের প্রত্নতাত্ত্বিকরা। এরপরই দেশটির জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েইবোতে ভাইরাল হয় স্বর্ণের মাস্কের অসংখ্য মিম।
ফটোশপের মাধ্যমে বিখ্যাত বিভিন্ন চরিত্র ও ছবির ওপর মুখোশের ছবি বসিয়ে দিচ্ছেন মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহারকারীরা।
মাস্ক পরিহিত জাপানিজ অ্যাকশন চরিত্র 'আল্ট্রাম্যান'। ছবি: ওয়েইবো
হ্যাশট্যাগ ‘সানজিংদুই গোল্ড মাস্ক ফোটো এডিটিং কম্পিটিশন’ দেখেছেন ৪০ লাখের বেশি ব্যবহারকারী। সৃজনশীল হিসেবে উইবো ব্যবহারকারীদের এ উদ্যোগ বেশ প্রশংসাও কুড়িয়েছে সারা বিশ্বের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ।
শেষমেষ মজার এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে বাদ রাখেননি শানজিংদুই জাদুঘরের কর্মকর্তারাও।
নিজেরাই একটি মিম বানিয়ে ওয়েইবোতে ছেড়েছেন তারা। লিখেছেন, ‘শুভ সকাল, ঘুম ভাঙার পর মনে হচ্ছে সবাই ফটোশপ নিয়ে খুব ব্যস্ত?’
প্রচারের অংশ হিসেবে স্বর্ণের মুখোশসহ অন্যান্য নিদর্শন সমেত একটি অ্যানিমেটেড ভিডিও’ও প্রকাশ করেছে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। প্রাচীন সভ্যতাকে ছড়িয়ে দেয়ার প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয় তাতে।
অবশ্য সামাজিক মাধ্যমে চীনের শৈল্পিক নিদর্শনের এমন সাড়া ফেলার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত আগস্টেই শূকরের সঙ্গে মিল থাকা আরেকটি নিদর্শনকে জনপ্রিয় ভিডিও গেম অ্যাংরি বার্ডসের চরিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি হয়েছিল মিম।
স্বর্ণের মাস্ক ছাড়াও ব্রোঞ্জের টুকরো, স্বর্ণের পাত, হাতির দাঁত, রেশম আর জেড হিসেবে পরিচিত সবুজ খনিজ পাথরে তৈরি নানারকম প্রাচীন শৈল্পিক নিদর্শন খুঁজে পেয়েছেন শানজিংদুইয়ের প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
চীনের জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শু সভ্যতায় শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনার অংশ হিসেবে বলি দেয়ার প্রচলন ছিল। বলিদানের জন্য ব্যবহৃত ছয়টি হাড়িকাঠ ও বেদি থেকে এসব নিদর্শন পাওয়া গেছে।
১৯২৯ সালে শানজিংদুইয়ে চাষাবাদের সময় প্রাচীনকালের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান একদল কৃষক। এরপর ৯২ বছরে সেখানকার মাটির নিচে আবিষ্কৃত হয়েছে ছোটবড় ৫০ হাজারের বেশি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।