পিপা নাইট। বয়স পাঁচ বছর। ২০ মাস বয়সে জটিল এক রোগে আক্রান্ত হয় শিশুটি। এতে ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়ে তার মস্তিষ্ক।
দুরারোগ্য এনক্রোটাইজিং এনসেফেলোপ্যাথিতে আক্রান্ত পিপার চিকিৎসা শুরু হয় যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ইভেলিনা চিলড্রেনস হাসপাতালে। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় শিশুটিকে। এভাবে প্রায় দুই বছর ধরে চলে চিকিৎসা।
একপর্যায়ে চিকিৎসকেরা জানান, পিপার বাঁচার সম্ভাবনা একেবারেই নেই। তাই তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন।
তবে পিপার মা চাইছিলেন চিকিৎসকরা যাতে তার মেয়ের চিকিৎসা চালিয়ে যান। ৪১ বছর বয়সী মা পাওলা পারফিট বহনযোগ্য ভেন্টিলেটর বাড়িতে এনে মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখতেও চেয়েছিলেন। গত মাসেও তাকে দেখা গেছে বহনযোগ্য ভেন্টিলেটরের সাহায্যে পিপাকে হাসপাতালের বারান্দায় নিয়ে ঘুরে বেড়াতে।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিষয়টি গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। জানুয়ারিতে এক শুনানিতে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, আইনসম্মতভাবেই পিপার চিকিৎসা বন্ধ করা হবে।
তবে পিপার মা রায় মানতে নারাজ। তিনি আপিল করেন সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে। আপিলে তিন বিচারকের বেঞ্চ জানায়, বাড়িতে নয়, হাসপাতালেই মরতে হবে পিপাকে।
চলতি বছর মার্চে বিচারক কিং, বেকার ও এলিজাবেথের বেঞ্চে হওয়া শুনানিতে বলা হয়, একজন অভিভাবকের কাছে সন্তানের নিশ্চিত মৃত্যু কষ্টের।
পিপার মায়ের আইনি লড়াইয়ে সহায়তা করেছে সোসাইটি ফর দ্য প্রটেকশন অফ আনবোর্ন চিলড্রেন নামের একটি সংগঠন।
শুনানির দিন সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী জন দিঘান বলেন, ‘আজ অত্যন্ত দুঃখের দিন। আশার বাতিকে নিভিয়ে দিয়েছে আদালতের সিদ্ধান্ত।
‘মেয়েটি প্রতিটা নিঃশ্বাসে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছে। আদালতের সিদ্ধান্তে আজ লড়াই শেষ হওয়ায় পথে।’
পিপার মায়ের আশা, সুপ্রিম কোর্টের আপিল আবার পুনর্বিবেচনা করবে।