মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে সহিংস ভূমিকা রাখায় দেশটির ১১ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
এ বিষয়ে সোমবার বৈঠকে বসবেন ইইউভুক্ত ২৭টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইইউর কয়েকজন কূটনীতিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে শনিবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সেনাবাহিনী ও এর অর্থনৈতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে গত মাসে একমত হয় ইইউ। এরই অংশ হিসেবে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তৎপর হয়েছে ২৭টি দেশ নিয়ে গঠিত জোট।
ইইউর এক কূটনীতিক বলেন, মিয়ানমারের ১১ সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তার সম্পদ জব্দ ও ভিসা বন্ধের বিষয়ে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে সোমবার বৈঠকে বসবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
ইইউর কূটনীতিকদের ভাষ্য, মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ওপর শুরুতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না। তবে পরে কয়েকটি ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
এদিকে শনিবার মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন জাতিসংঘের বিশেষ রেপোর্টিয়ার টম অ্যান্ড্রুজ। গণ-আন্দোলন দমাতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চলমান সহিংস কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়া মিয়ানমারের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া সামরিক নেতাদের অর্থ ও অস্ত্র জোগানের পথ বন্ধেরও আহ্বান জানান অ্যান্ড্রুজ।
এর আগে সেনাশাসনের অবসান ও নির্বাচিত নেতা অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারের জনগণের আন্দোলন ঠেকাতে দেশটির সেনাবাহিনীর ভয়াবহ সহিংস পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
মিয়ানমারের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলিষ্ঠ ও সমন্বিত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলেও মত দেন তিনি।
দেশটির সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইইউর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সেনা সরকারের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেননি।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলনে শুক্রবার পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ২৩৪ জনের মৃত্যু হয়। গ্রেপ্তার হয়েছে দুই হাজারের মতো বিক্ষোভকারী।