বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে পাকিস্তান আগ্রহী বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে সব ধরনের কার্যক্রম গ্রহণেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান সিদ্দিকীকে নিজের বাসভবনে ডেকে এই আগ্রহের কথা জানান প্রেসিডেন্ট আলভি।
আলাপচারিতায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত মূল্যবান বলে মনে করে পাকিস্তান। আমরা বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ব্যবহার করে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়াতে চাই।’
ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সামনে রেখে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হাইকমিশনার ইমরান সিদ্দিকীকে ঢাকা থেকে পাকিস্তানে ডেকে পাঠায় পাকিস্তান সরকার।
আলাপচারিতায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আরও মনোযোগ দিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট আলভি। এ সময় তিনি পারস্পরিক সুবিধার জন্য দুই দেশের অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও নাগরিকদের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বারোপ করেন।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে খেলাধুলা নিয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ে জোর দেয়ার পরামর্শ দেন প্রেসিডেন্ট আলভি।
বাংলাদেশে ১৭ মার্চ শুরু হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। ১০ দিনের এই উৎসবে ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, ভুটান ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নিচ্ছেন।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশকে শুভকামনা জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন হাইকমিশনার ইমরান সিদ্দিকী। এর পরেই পাকিস্তানের ভিসায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে দেয় দেশটি।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনা ও যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনসহ বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রম রয়েছে। তবে এর অনেকগুলোই দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে রয়েছে। প্রায় ১২ বছর ধরে বন্ধ থাকা দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের সংলাপ আবারও চালু হতে পারে বলে আশা করা হয়েছে ডনের প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতাগ্রহণের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে বাংলাদেশের।
১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধের ভেতর দিয়ে পাকিস্তানের কবল থেকে মুক্ত হয় বাংলাদেশ। যুদ্ধে বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর নজিরবিহীন গণহত্যা ও নিপীড়ন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী।
আরও পড়ুন: উন্নয়নে আমাদের ধারেকাছে নেই পাকিস্তান: বাণিজ্যমন্ত্রী