বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সৌদি আরবে প্রবাসী কর্মীদের জন্য সংশোধিত কাফালা ব্যবস্থা কার্যকর

  •    
  • ১৪ মার্চ, ২০২১ ১৮:৩১

নতুন নিয়মে সৌদি আরবে কর্মক্ষেত্র পরিবর্তনে বা দেশে ফিরতে নিয়োগকর্তাদের অনুমতি দরকার হবে না প্রবাসী কর্মীদের। নিজেদের ইচ্ছায় পরবর্তীতে দেশটিতে ফেরার পথও থাকছে উন্মুক্ত।

অবশেষে প্রবাসী কর্মীদের বহুল প্রত্যাশিত কাফালা ব্যবস্থা কার্যকর করল সৌদি সরকার। নতুন ব্যবস্থায় দেশটিতে কর্মরত প্রবাসীরা নিয়োগকর্তার অনুমতি ছাড়াই কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন করতে পারবেন।

বর্তমানে সৌদি আরবে কাফালা ব্যবস্থার আওতায় ১ কোটির বেশি ভিনদেশি শ্রমিকের বাস।

এ ব্যবস্থায় এতদিন নির্দিষ্ট একজন সৌদি নিয়োগকর্তার যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া দেশটিতে প্রবাসী কর্মীদের প্রবেশাধিকার বা দেশত্যাগের সুযোগ ছিল না।

একই সঙ্গে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় শ্রমবাজারের দেশটি থেকে বের হতে এবং পুনরায় ফিরতে অনুমতি নেয়ার বিধিও অন্তর্ভুক্ত ছিল এ ব্যবস্থায়।

গত নভেম্বরে প্রথম কাফালা ব্যবস্থা সংস্কারের ঘোষণা দেয় সৌদি মানবসম্পদ ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। জানানো হয়, সৌদি আরবে প্রবাসী কর্মীদের বসবাস ও কাজের অনুমতি নবায়ন ও বাতিলের নিয়ম পরিবর্তনের পরিকল্পনার কথা।

এতদিন কাফালা ব্যবস্থায় যে নিয়োগকর্তার হাত ধরে কোনো কর্মীর সৌদি গমন, কেবল তারই এ অনুমতি নবায়ন বা বাতিলের অধিকার ছিল।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর অভিযোগ ছিল, এ ব্যবস্থার কারণে বিশেষত গৃহকর্মী ও নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কর্মরত প্রবাসীরা নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতেন। কর্মীদের পাসপোর্ট আটকে রেখে অতিরিক্ত সময় কাজ করানো, পারিশ্রমিক না দেয়া, এমনকি নির্মম নির্যাতনেরও অভিযোগ রয়েছে সৌদি নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে।

সংশোধিত কাফালা ব্যবস্থা অনুযায়ী, নিয়োগকর্তার সাথে কর্মীদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে এখন থেকে নিজেদের ইচ্ছাতেই নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগদানের সুযোগ পাবেন প্রবাসীরা।

চুক্তিবদ্ধ থাকাকালীন চুক্তিতে উল্লেখিত নির্দিষ্ট সময় হাতে রেখে নিয়োগকর্তাকে আগাম নোটিশ দিয়ে কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন ও দেশত্যাগের বিধিও রয়েছে সংশোধিত কাফালা ব্যবস্থায়।

নতুন নিয়মে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরতে নিয়োগকর্তাদের অনুমতি দরকার হবে না প্রবাসীদের। নিজেদের ইচ্ছায় পরবর্তীতে সৌদি আরবে ফেরার পথও থাকছে উন্মুক্ত।

কাজের চুক্তিপত্র সরবরাহ করা হয়নি এবং পারিশ্রমিক পরিশোধ করা হয়নি, এমন প্রবাসী কর্মীদের স্বার্থে সামনে যুক্ত হবে আরও কিছু নিয়ম।

পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা জোটের ছয় সদস্য দেশেই কাফালা ব্যবস্থায় কাজে যোগ দেন প্রবাসী কর্মীরা। নানা বিতর্কের মুখে গত কয়েক বছরে অঞ্চলটির বেশ কিছু দেশে শ্রমিকদের কল্যাণে এ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

তবে সমালোচকদের মতে, নিয়োগকর্তাদের কর্তৃত্ব কমলেও সৌদি আরবে প্রবাসী শ্রমিকদের আবাসন ও কর্মক্ষেত্রে যোগদানের ভিসা ব্যবস্থা এখনও ‘কফিল’ বা পৃষ্ঠপোষকদের নিয়ন্ত্রণে। এ কারণে নির্যাতন বন্ধের ব্যাপারে খুব একটা আশাবাদীও নন তারা।

সৌদি আরবে বাস ২০ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিকের। মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশি বিদেশি শ্রমবাজারে যোগ দেন; যাদের প্রায় ৭৪ শতাংশের গন্তব্য ছিল সৌদি আরব।

২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসী শ্রমিকদের মাধ্যমে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার রাজস্ব পায় বাংলাদেশ সরকার; যার ৩৫০ কোটি ডলারই এসেছিল সৌদি আরব থেকে।

কিন্তু প্রবাসী শ্রমিক নিপীড়নের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতিও এদেশটিতেই। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নির্যাতনের শিকার কমপক্ষে ৪১০ জন বাংলাদেশি নারী শ্রমিকের মরদেহ পৌঁছেছে। শুধু সৌদি আরবেই প্রাণ গেছে ১৫৩ জনের।

এ বিভাগের আরো খবর