কানাডার ফেডারেল কারাগারে ২৫ শতাংশের বেশি বন্দিকে রাখা হয় নির্জন কক্ষে। এদের প্রতি ১০ জনে একজনকে এমন নির্যাতন করা হয়, যা জাতিসংঘের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সম্প্রতি দেশটির কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এই চিত্র।
নির্জন কক্ষে বন্দি রাখা হবে না, এমন আইন দুই বছরের বেশি সময় আগে পাস হলেও এত দিনেও তা কার্যকর করতে পারেনি কানাডা সরকার। দেশটির মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চাপের মুখে ২০১৯ সালে ওই আইনটি পাস হয়েছিল।
এ বিষয়ে টরন্টোর রিয়ারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধতত্ত্বের অধ্যাপক জেন স্প্রোট বলেন, ‘আইন করার পর কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বরং এটার (নির্জন কক্ষে রাখার) প্রবণতা আরও বাড়ছে।’
কানাডার কারাবন্দিদের মধ্যে কর্তৃপক্ষ কাউকে নিরাপত্তা হুমকি বিবেচনা করলে কিংবা কারও বিরুদ্ধে জিজ্ঞাসাবাদ চললে তাকে নির্জন কক্ষে রাখা হয়। এ কক্ষগুলো পরিচিত স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট (এসআইইউ) হিসেবে।
কানাডার আইন অনুযায়ী, এসআইইউ থেকে বন্দিকে দিনে অন্তত চার ঘণ্টা বাইরে থাকার সুযোগ দিতে হবে। তবে এই নিয়ম বেশির ভাগ কারাগারে মানা হচ্ছে না বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
অপরাধতত্ত্বের অধ্যাপক জেন স্প্রোট বলছেন, অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২৮ শতাংশের বেশি বন্দিকে নির্জন কক্ষে রাখা হচ্ছে ২২ ঘণ্টার বেশি। এ সময় তারা কারও সঙ্গে দেখা বা কথা বলার সুযোগ পান না।
অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, ৯ দশমিক ৯ শতাংশ বন্দিকে টানা ১৫ দিন কারও সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয় না, যা ‘ম্যান্ডেলা রুলসের’ একেবারে বিপরীত।
বন্দিদের নির্জন কক্ষে রাখার জাতিসংঘের নির্ধারিত নিয়মকে ম্যান্ডেলা রুলস বলা হয়।
স্প্রোট বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন অবস্থায় একজন মানুষের ওপর নানা ধরনের প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এ কারণে অনেক বন্দির কারাগারে মৃত্যু হয়। এটা আসলে জেলের মধ্যে আরেক জেল।’