সাড়ে তিন বছরের টানাপোড়েন ভুলে আবার জোড়া লেগেছে দুই প্রতিবেশী দেশ সৌদি আরব ও কাতারের সম্পর্ক। এর অংশ হিসেবে এবার দোহা সফরে এসেছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ডেইলি সাবাহ লিখেছে, দোহায় সোমবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও কুয়েতের মধ্যস্থতায় গত জানুয়ারিতে সৌদি-কাতার সম্পর্কের বরফ গলে। কাতারের সীমান্ত থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় রিয়াদ।
২০১৭ সালের মাঝামাঝিতে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের অভিযোগ এবং আঞ্চলিক রাজনীতিতে টানাপোড়েনের জেরে কাতারের ওপর সীমান্তসহ নানা ধরনের অবরোধ আরোপ করে সৌদি আরব ও তাদের মিত্র দেশগুলো।
কাতারের সঙ্গে সব ধরনের কূটনীতিক সম্পর্কের ছেদের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, বাহরাইন, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। অভিযোগ- কাতার এই অঞ্চল অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত; মুসলিম ব্রাদারহুড ও আইএসের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
সম্পর্ক আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হলে কাতারকে ১৩টি শর্ত বেঁধে দেয় সৌদি আরব ও তাদের মিত্র দেশগুলো। এসব শর্তের মধ্যে ছিল ইরানের সঙ্গে সম্পর্কে লাগাম টানা, তুরস্কের একটি সামরিক ঘাঁটি সরানো এবং আল জাজিরা টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করা।
কোনোটিই মেনে না নেয়ায় কাতারের ওপর অবরোধ বহাল রাখে সৌদি আরব ও তাদের মিত্ররা।
এতে কাতার অনেকটা বন্দিদশায় পড়লেও বড় সমস্যায় পড়েনি। নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি দেশটির অর্থনীতিতেও। বরং কৌশলী কূটনৈতিক তৎপরতায় এই সংকট ভালোভাবেই সামাল দেয় দোহা। অবরোধের সময়টাতে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে তুরস্ক ও ইরান।
এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সৌদি মিত্র ডনাল্ড ট্রাম্পের হারে আরও চাপে পড়ে রিয়াদ।
এসবের মধ্যেই কাতারের সঙ্গে আবারও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে হাঁটে সৌদি। যুক্তরাষ্ট্রও তা-ই চাচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা দেখা যায় ট্রাম্প-জামাতা ও হোয়াইট হাউসের সাবেক উপদেষ্টা জেরার্ড কুশনারেরও।
সৌদির পাশাপাশি তাদের মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসরও কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক আবার জোরদার করে।
কাতারের আমির তামিম আল থানির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের বার্তা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফারহান।