যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলোর বর্ণবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পরিবারসহ দেশ ছাড়তে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে দাবি করেছেন ডিউক অফ সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রখ্যাত টেলিভিশন সঞ্চালক অপরাহ উইনফ্রের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে তিনি এমন দাবি করেন।
সে অনুষ্ঠানে রাজপরিবার নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দেন হ্যারি ও তার স্ত্রী ডাচেস অফ সাসেক্স মেগান মার্কেল। স্থানীয় সময় রোববার রাতে সিবিএসে সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার হয়।
পরের দিন সোমবার রাতে ওই সাক্ষাৎকার ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল আইটিভি সম্প্রচার করে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সিবিএসে সাক্ষাৎকারের অসম্প্রচারিত কিছু অংশও আইটিভি প্রচার করে।
ট্যাবলয়েডগুলোর বর্ণবাদের কারণে হ্যারি ও মেগান যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন কি না, অপরাহর এমন প্রশ্নের জবাবে হ্যারি বলেন, যুক্তরাজ্য ছাড়ার পেছনে ট্যাবলয়েডের বড় ভূমিকা রয়েছে।
হ্যারি বলেন, রাজদায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরপরই বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকের সঙ্গে বন্ধুত্ব আছে এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে তার কথা হয়। ওই ব্যক্তি তাকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তাদের (হ্যারি-মেগানের) বৈরী অবস্থানের বিষয়ে সতর্ক করেন।
ওই ব্যক্তি হ্যারিকে বলেছিলেন, ‘মিডিয়ার সঙ্গে এমন করো না। তারা তোমাদের জীবন ধ্বংস করে দেবে।’
ব্যক্তিগত এক চিঠির বিষয়ে ব্রিটিশ রক্ষণশীল ট্যাবলয়েড পত্রিকা দ্য মেইল অন সানডের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন মেগান। এর কয়েক মাস পরই ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে সম্পাদকদের ওই বন্ধু হ্যারির সঙ্গে আলাপকালে ওই সতর্কবার্তা দেন।
হ্যারি বলেন, তার মা প্রিন্সেস ডায়ানা যে ক্ষমতাবান শক্তির হাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন, তারাই ফের তার স্ত্রীকে তাদের শিকারে পরিণত করে কি না, এ নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন তিনি।
সম্পাদকদের ওই বন্ধু হ্যারিকে বলেছিলেন, ‘তোমাকে বুঝতে হবে, যুক্তরাজ্য অনেক গোঁড়া দেশ।’
জবাবে হ্যারি বলেছিলেন, ‘যুক্তরাজ্য গোঁড়া নয়, এর সংবাদমাধ্যম, বিশেষ করে ট্যাবলয়েডগুলো গোঁড়া।’
সাক্ষাৎকারে অপরাহকে হ্যারি বলেন, ‘যদি ওই তথ্যের সূত্র মজ্জাগতভাবে নীতিভ্রষ্ট, বর্ণবাদী বা পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তাহলে সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে এসব মনোভাব সমাজেও ছড়িয়ে পড়েছে।’
এদিকে সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে হ্যারির বর্ণবাদের অভিযোগের নিন্দা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংস্থা সোসাইটি অফ এডিটরস।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইয়ান মারে বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম সব সময় ক্ষমতাবান, খ্যাতিমান বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের খবর সামনে আনে। তাদের করা প্রশ্ন কখনো কখনো বিব্রতকর হতে পারে। তবে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম কখনোই বর্ণবাদী নয়।’