বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাঁচার ইচ্ছা চলে গিয়েছিল: মেগান

  •    
  • ৮ মার্চ, ২০২১ ১০:৫৬

আত্মহননের চিন্তা এসেছিল কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে মেগান বলেন, ‘হ্যাঁ। এই ভয়াবহ চিন্তা স্পষ্টভাবেই এসেছিল। এসব চিন্তা থেকে বের হতে কার সাহায্য চাইব, তখন বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’

ব্রিটিশ রাজপরিবারে অনেক কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন ডাচেস অফ সাসেক্স মেগান মার্কেল। সেখানে একটা পর্যায়ে এসে বেঁচে থাকার ইচ্ছাও শেষ হয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে বাবা প্রিন্স চার্লসের আচরণ হতাশ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রখ্যাত টেলিভিশন সঞ্চালক অপরাহ উইনফ্রেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হ্যারি-মেগান দম্পতি এসব কথা বলেন।

সিবিএসে স্থানীয় সময় রোববার রাতে সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার হয়।

বিবিসিআল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, দুই ঘণ্টার ওই সাক্ষাৎকারে বর্ণবাদ, মানসিক স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম ও রাজপরিবারের সঙ্গে সম্পর্কসহ অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন হ্যারি ও মেগান।

সাক্ষাৎকারে এই গ্রীষ্মে তাদের কন্যাশিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ারও ঘোষণা দেন হ্যারি-মেগান।

মেগান বলেন, রাজপরিবারে অবস্থানের সময় কী কী করতে পারবেন, তার সীমা যখন তাকে নির্ধারণ করে দেয়া হয়, তখন থেকে নিঃসঙ্গ বোধ করা শুরু করেন তিনি। এসব বিধি-নিষেধের কারণে বেশ কয়েক মাস ঘরের বাইরে পর্যন্ত বের হতে পারেননি তিনি।

নিজের ক্ষতি বা আত্মহত্যার চিন্তা সে সময় মনে এসেছিল কি না, অপরাহর এমন প্রশ্নের জবাবে মেগান বলেন, ‘হ্যাঁ। এই ভয়াবহ চিন্তা স্পষ্টভাবেই এসেছিল। এসব চিন্তা থেকে বের হতে কার সাহায্য চাইব, তখন বুঝে উঠতে পারছিলাম না।’

ব্রিটিশ ডিউক ও ডাচেস হ্যারি ও মেগানকে রাজপরিবার রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় বলেও সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন দুজন।

মেগান বলেন, ‘ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, আমিই কেবল অরক্ষিত ছিলাম তা নয়, পরিবারের অন্য সদস্যদের রক্ষার বিষয়েও তারা (রাজপরিবার) মিথ্যা বলতে প্রস্তুত। অবশ্য আমাকে ও আমার স্বামীকে রক্ষার বিষয়ে তারা সত্য বলতে অপারগ।’

এ সময় ছেলে আর্চির জন্মের আগেই তাকে ঘিরে নানা ধরনের কানাঘুষা শুরু হয় বলে দাবি করেন মেগান।

তার অভিযোগ, অনাগত শিশুর গায়ের রং কত কালো হতে পারে তা নিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারে উদ্বেগ ছিল।

কৃষ্ণাঙ্গ মা ও শ্বেতাঙ্গ বাবার ঘরে জন্ম নেয়া মেগান বলেন, ২০১৮ সালে ব্রিটিশ রাজপরিবারে বিয়ের আগে সহজ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন তিনি। কিন্তু বিয়ের পর নানা সংকটে পড়েন তিনি। সে সময় অনুনয় বিনয় করেও সাহায্য-সহযোগিতা না পেয়ে একপর্যায়ে আত্মঘাতী চিন্তা মাথায় আসে তার।

তিনি বলেন, ‘আমার সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে থেকেই তারা (ব্রিটিশ রাজপরিবার) চায়নি সে প্রিন্স বা প্রিন্সেস হোক, যা কিনা প্রটোকলে নেই। আমার সন্তান কোনো নিরাপত্তা পাবে না বলেও সে সময় আমাদের জানানো হয়।’

মেগান বলেন, “আমার গর্ভধারণের সময়কালে ‘তোমাকে নিরাপত্তা দেয়া হবে না, এমনকি কোনো উপাধিও তুমি পাবে না’ এসব আলোচনা আমাকে ও হ্যারিকে শুনতে হয়েছে। আমার অনাগত সন্তানের গায়ের রং কত কালো হতে পারে, এ নিয়েও উদ্বেগ-ফিসফিসানি ছিল।”

উইন্ডসর ক্যাসেলে নবজাতক পুত্রসন্তান আর্চিকে নিয়ে হ্যারি ও মেগান। ছবি: এএফপি

রাজপরিবারের কে বা কারা ওই সময় এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে, তা নিয়ে মুখ খোলেননি মেগান।

সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয়ার্ধে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেন হ্যারি।

তিনি বলেন, দাদি রানি এলিজাবেথের সঙ্গে সম্পর্ক বেশ ভালো। তাদের মধ্যে প্রায়ই কথা হয়। তবে বাবা প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর নয় তার।

হ্যারি বলেন, রাজপরিবারের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় বাবা প্রিন্স চার্লস তার ফোন ধরা বন্ধ করে দেন। বাবাকে সবসময় ভালোবাসবেন তিনি। তবে অনেক ঘটনায় তিনি মনোকষ্ট পেয়েছেন।

বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম সম্পর্কে ছোট ভাই হ্যারি বলেন, তাদের দুজনের পথ আলাদা।

আর্থিক দিক দিয়েও পরিবার তাকে বঞ্চিত করেছে বলে সাক্ষাৎকারে জানান হ্যারি।

প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগানের সঙ্গে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই সাক্ষাৎকারে হাজির হন এ দম্পতি।

সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজদায়িত্ব থেকে সরে এসেছেন হ্যারি ও মেগান। বাকিংহ্যাম প্যালেস ছেড়ে তারা এখন ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থান করছেন।

হ্যারি-মেগানের সমালোচকদের অভিযোগ, কোনো ধরনের অঙ্গীকার ছাড়া পদের চাকচিক্য উপভোগ করতে চান প্রিন্স চার্লসের ছোট ছেলে প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী ডাচেস অফ সাসেক্স মেগান।

অন্যদিকে হ্যারি-মেগান দম্পতির সমর্থকদের ভাষ্য, আধুনিক ও মিশ্র বর্ণের আবহে বেড়ে ওঠা মেগানের প্রতি অনেক আক্রমণাত্মক ছিল সেকেলে ব্রিটিশ রাজপরিবার।

রাজপরিবারের সদস্যদের হাতে মেগানের হেনস্তা হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে প্রথম খবর প্রকাশ হয় দ্য টাইমস পত্রিকায়।

এ বিভাগের আরো খবর