মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের শনিবার রাতভর ধরপাকড় করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এরপরও জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে পরের দিন রোববার সকালেই বিক্ষোভে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে শুরু থেকেই কঠোর অবস্থানে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশে প্রায় প্রতিদিনই জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের পাশাপাশি ছোড়া হচ্ছে গুলি ও গ্রেনেড। একই সঙ্গে চলছে আটকের ঘটনা।
রোববার ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, দেশটির উত্তরের শান অঞ্চলের লাশিও শহরে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ছুড়ছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানিয়েছে, ঐতিহাসিক মন্দিরের শহর বাগানে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছুড়েছে পুলিশ। তবে তারা রাবার বুলেট ছুড়েছে নাকি তাজা গুলি ছুড়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হতাহতের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।
রোববার সবচেয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ হয় মান্দালয় শহরে। সেখানে পুলিশ ও সেনাদের হাতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দুই মিনিট নীরবতা পালন করে আন্দোলনকারীরা।
দক্ষিণাঞ্চলীয় দাওয়ে শহরে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে এক নেতা বলেন, ‘পশুপাখির মতো তারা মানুষ মারছে। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা ছাড়া আর কী করার আছে আমাদের? আমরা অবশ্যই বিদ্রোহ করব।’
ইয়াঙ্গুনের অন্তত তিনটি এলাকা থেকে শনিবার রাতে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার অভিযান চালানোর সময় গুলিও ছোড়ে তারা।
মিয়ানমারের সদ্য বিলুপ্ত পার্লামেন্টের সদস্য সিথু মং তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, রাতে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) এক আইনজীবীর খোঁজ করে সেনারা। তবে তাকে পাওয়া যায়নি।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের তথ্য অনুযায়ী, আন্দোলনের শুরু থেকে শনিবার পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ আটক করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ ও জান্তা সরকারের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেনি।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্ষমতাসীন জান্তা সরকারের পতন ও নির্বাচিত নেতা অং সান সু চির মুক্তির দাবিতে চলমান আন্দোলনে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।