ইসরায়েলের দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যুদ্ধাপরাধ অভিযোগের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
বুধবার এ ঘোষণা দিয়েছেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি ফাতু বেনসুদা।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সব ধরনের ভয়ভীতি উপেক্ষা করে, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে তদন্ত করা হবে।
তিনি আরও জানান, ২০১৪ সালের ১৩ জুন থেকে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যেসব অপরাধের অভিযোগ আছে, আইসিসির বিচার নীতিমালার মধ্যে থেকে সেগুলোর তদন্ত করা হবে।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের অবরোধ আরোপ নিয়ে বিচারের নীতিমালা আইসিসির আছে বলে জানিয়েছিল আইসিসি। যদিও বরাবরই এ পদক্ষেপের তুমুল বিরোধিতা করে আসছে ইসরায়েল।
যুদ্ধাপরাধ তদন্তের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে দেশটির অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফল বহুল প্রত্যাশিত এ পদক্ষেপ।
আইসিসির পদক্ষেপে সন্তোষ জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসও। বিবৃতিতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের জনগণের ওপর ইসরায়েলি দখলদাররা যে যুদ্ধাপরাধ সংঘটন করেছে, তার সুষ্ঠু তদন্তে আইসিসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। অসহায় ফিলিস্তিনিদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ খুলে গেল এ পদক্ষেপের মাধ্যমে।’
অবশ্য এ সময় গাজায় নিজেদের সশস্ত্র তৎপরতারও পক্ষেও কথা বলেন কাশেম। তিনি বলেন, ‘নিজ ভূখণ্ডে নিজেদের জনগণের প্রতিরক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা অন্যায় নয়। যৌক্তিক কারণে প্রতিরোধ গড়ে তুললে তাতে কোনো আন্তর্জাতিক আইন বাধা দিতে পারে না।’
এর আগে ২০১৯ সালে ফাতু বেনসুদা বলেছিলেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি স্থাপনসহ দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযান যুদ্ধাপরাধ কি না, সে প্রশ্নে তদন্তের যৌক্তিক জায়গা রয়েছে।
ওই বক্তব্যের পরই অস্থিতিশীল অঞ্চলটিতে আইসিসির বিধিমালা কতটা প্রয়োগযোগ্য, তা যাচাইয়ে বিচারকদের নির্দেশ দেন তিনি।
ফেব্রুয়ারিতে এ সংক্রান্ত রায়ে বিচারকরা জানান, হেগভিত্তিক আদালতটি প্রতিষ্ঠার সময় গৃহীত নীতিমালার আওতায় ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে কাজ করা সম্ভব। যদিও ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয় এবং ওই রায় প্রত্যাখ্যানও করে।
সে সময় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘ইহুদিবিরোধী মানসিকতা থেকে যুদ্ধাপরাধের ভুয়া অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান করেছে আইসিসি।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আইসিসির যুদ্ধাপরাধ তদন্ত নিয়ে তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তটি ইহুদি রাষ্ট্রের ওপর হামলার শামিল।
২০১৪ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দ্বারস্থ হয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। সে সময় পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের পাশাপাশি বসতি স্থাপনের বিষয়েও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফিলিস্তিন।