বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘গুলি যেন না লাগে’

  •    
  • ৩ মার্চ, ২০২১ ১১:৩১

মিয়ানমারের কচিন রাজ্যের রাজধানী মিতকিনা শহরের স্বেচ্ছাসেবী নার্স জে নান বলেন, ‘রাজপথে চিকিৎসাসেবা দেয়ার সময় আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গুলি যেন না লাগে। ওই সময় আমাদের গায়েও গুলি লাগতে পারে। যেকোনো সময় আমরাও মারা যেতে পারি।’

এক বছরও হয়নি মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে মেডিক্যালের পড়াশোনা শেষ করেছেন আই নিইন থু। ২৫ বছর বয়সী এই চিকিৎসক এখন দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আহত আন্দোলনকারীদের জরুরি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন।

‘আহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগেরই মাথায় আঘাতের কারণ তাদের লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। তাদের ওপর গুলিও চালানো হয়েছে। ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা’, বলেন তরুণ এই চিকিৎসক।

গত সোমবার থেকে ১০টির মতো জরুরি সেবা দিয়েছেন আই নিইন।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে জনগণকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারি কেন্দ্রের বাইরেও স্বাস্থ্যকর্মীরা স্বেচ্ছায় কাজ করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহিংসতা দিনকে দিন বেড়ে যাওয়ায় তাদের জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।

মিয়ানমারের কচিন রাজ্যের রাজধানী মিতকিনা শহরের স্বেচ্ছাসেবী নার্স জে নান বলেন, ‘রাজপথে চিকিৎসাসেবা দেয়ার সময় আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গুলি যেন না লাগে। ওই সময় আমাদের গায়েও গুলি লাগতে পারে। যেকোনো সময় আমরাও মারা যেতে পারি।’

চিকিৎসক কং খান্ত তিনের তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্তত ছয়টি দলের একটিতে কাজ করছেন নার্স জে নান। কখনো এক জায়গায় আবার কখনো শহরজুড়ে ঘুরে ঘুরে দলগুলো আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের জরুরি চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে।

কং খান্ত আরও বলেন, ‘এদের মধ্যে কেবল একটি দলের সেলাই ও গুরুতর আহত ব্যক্তিদের সেবা দেয়ার মতো উপকরণ ও জনবল রয়েছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনী বিভিন্ন সড়ক বন্ধ করে দেয়ায় জরুরি সেবা দিতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর তথ্যের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে চিকিৎসা সহায়তাদানকারী ব্যক্তিদের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সেনাবাহিনী। এতে চিকিৎসাসেবা দলের এক স্বেচ্ছাসেবক আহত হন। দলটির জরুরি চিকিৎসাসেবা দেয়া এরপর থেকে বন্ধ।

এ নিয়ে কং খান্ত বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সহিংসতা এভাবে চলতে থাকলে আহত ব্যক্তিদের কোথায় পাঠাব, তা আমরা জানি না।’

‘রক্তাক্ত রোববারে’ নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করছে ইয়াঙ্গুনের আন্দোলনকারীরা। ছবি: এএফপি

গত ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চিসহ নির্বাচিত ৪০ জনেরও বেশি নেতাকে গ্রেপ্তার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এর পরপরই এক বছরের জরুরি অবস্থা ঘোষণার মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় বসে সেনারা।

সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে বিক্ষোভ চলছে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের প্রায় ৭৫ শতাংশ ধর্মঘট পালন করছে।

পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) তথ্য অনুযায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০০ জন।

২৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে দেশজুড়ে এক দিনেই অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ দিনকে আন্দোলনকারীরা নাম দিয়েছে ‘রক্তাক্ত রোববার’।

ইয়াঙ্গুন জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মকর্তা রেডিও ফ্রি এশিয়াকে বলেন, দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন স্বাস্থ্যসেবাকে ব্যাহত করছে। অসহযোগ আন্দোলনে চিকিৎসক-কর্মকর্তারা যোগ দেয়ায় দেশের ৮০ শতাংশের মতো সরকারি হাসপাতাল বন্ধ রয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর