দুই মাস কিছুটা কম থাকার পর ভারতে করোনা শনাক্তের সংখ্যা আবারও বাড়ছে। চলতি মাস থেকে আবার ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা। এর মধ্যে কয়েকটি রাজ্যের পরিস্থিতি বেশ জটিল।
গত কয়েকদিনে ভারতে প্রায় প্রতিদিনই করোনা শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছাচ্ছে ১৩-১৪ হাজারে। বুধবারই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০০ এর বেশি মানুষ।
যে রাজ্যগুলোতে করোনা আবার বাড়ছে এর মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, কেরালা, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ।
গত মাসে কেরালা ছাড়া বাকি রাজ্যগুলোর দৈনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত কদিনে মহারাষ্ট্রে আবার বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। আড়াই-তিন হাজারের আশপাশে থাকতে থাকতে তা লাফিয়ে বেড়ে পাঁচ-ছয় হাজারে পৌঁছেছে। পাশাপাশি ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যেও আক্রান্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে দৈনিক সংক্রমণ পাঁচ হাজার ছাড়ালেও কেরালায় তা কমে আড়াই হাজারের নিচে।
নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের ধরন পরিবর্তনও চিন্তা বাড়াচ্ছে বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসকদের। ইতোমধ্যে ‘এন ৪৪০কে’ এবং ‘ই ৪৮৪কে’, এই দুটি স্ট্রেইনের সন্ধান মিলেছে মহারাষ্ট্র, কেরালা এবং তেলেঙ্গনায়।
এই তিনটি রাজ্যের সঙ্গে ছত্তিশগড় ও পাঞ্জাব কে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও করোনা ভাইরাসের মিউটেশন ও ধরন পরিবর্তনের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন।
এই কদিনের প্রায় ৩৫০০ নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা দেখছেন ভাইরাসের অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন নজরে আসে কিনা।
বুধবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ঘোষণা দিয়েছেন, ১ মার্চ থেকে দেশের বয়স্ক নাগরিক ও অন্যান্য রোগে ভোগা ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের করোনা টিকা দেয়ার কাজ শুরু হবে।
তিনি জানিয়েছেন, ১০ হাজার সরকারি কেন্দ্রের পাশাপাশি ২০ হাজার বেসরকারি কেন্দ্রেও টিকা দেয়া হবে।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রথম পর্বে এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী ও দুই কোটি সম্মুখসারির কর্মীকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছেন প্রায় ৬০ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী।
দ্বিতীয় পর্বে টিকা দেয়া হয় পুলিশ ও অন্যান্য সম্মুখসারির কর্মীদের। এই পর্বেও বহু মানুষ টিকা নিয়েছেন। এবার তৃতীয় পর্যায়ে টিকার আওতায় আসবেন ষাটোর্ধ্ব ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ৪৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ।
দিল্লির রাজ্য সরকার বুধবার এক নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, কেরালা, মহারাষ্ট্র ,পাঞ্জাব ,ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ থেকে বাস, বিমান বা ট্রেনে দিল্লিতে ঢুকলে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানো আবশ্যক।
তবে সড়কপথে ছোট গাড়িতে দিল্লিতে ঢুকতে গেলে এ ধরনের কোনো রিপোর্ট দেখাতে হবে না। দিল্লি ঢোকার আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটি–পিসিআর টেস্ট করাতে হবে।
শনিবার থেকে চালু হচ্ছে নতুন নিয়ম। ১৫ মার্চ পর্যন্ত আপাতত দেখাতে হবে রিপোর্ট। গত কয়েক সপ্তাহে দেশে যত জন আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৮৬ শতাংশই এই পাঁচ রাজ্যের। সূত্রের খবর, সে কারণেই সক্রিয় হয়েছে দিল্লি সরকার। কারণ দিল্লিতে এখন করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।