কারফিউ, রাস্তা অবরোধ, গণগ্রেপ্তার ও হুমকি উপেক্ষা করে সোমবার সাধারণ ধর্মঘট শুরু হয়েছে মিয়ানমারজুড়ে।
সেনাশাসনের অবসান, নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবিতে টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় মিয়ানমারে বিক্ষোভ চলছে। এরই অংশ হিসেবে সেনাশাসক উৎখাতে ধর্মঘটের ডাক দেয় দেশটির আন্দোলনকারীরা।
রয়টার্স ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারে সোমবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটে বন্ধ রয়েছে দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্য কার্যক্রম।
দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের হ্লেডান মোড়ে সান সান মো নামের এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘বিক্ষোভে সবাই যোগ দিচ্ছে। আমাদের রাজপথে নামতে হবে।’
২২ বছর বয়সী তেত তেত হ্লাইং জানান, সোমবারের বিক্ষোভে অংশ নেয়ার আগে তিনি প্রার্থনা করেছেন। তিনি ভীত, তবে তাকে মোটেই বিক্ষোভে অংশ নেয়া থেকে রোখা যাবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা সামরিক জান্তা সরকার চাই না, গণতন্ত্র চাই। নিজেদের ভবিষ্যৎ আমরা নিজেরাই রচনা করতে চাই। আমার মা আমাকে বিক্ষোভে অংশ নিতে আটকাননি। তিনি আমাকে আমার খেয়াল রাখতে বলেছেন।’
সোমবারের ধর্মঘটের বিষয়ে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করেছে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআরটিভি। এতে বলা হয়, বিক্ষোভকারীরা জনগণ বিশেষ করে আবেগপ্রবণ কিশোর ও তরুণদের উসকানি দিচ্ছে। তারা কিশোর-তরুণদের সংঘাতের মুখে ঠেলছে। এতে তাদের প্রাণহানি ঘটতে পারে।
মিয়ানমারের রাজনীতিতে তারিখের সংখ্যাকে শুভ ও তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। ধর্মঘটের ২২.২.২০২১ তারিখকে ৮.৮.১৯৮৮ তারিখের সঙ্গে তুলনা করছে দেশটির আন্দোলনকারীরা।
মিয়ানমারের আগের প্রজন্ম ৮৮৮৮ গণ-অভ্যুত্থানে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ফেটে পড়ে। সে সময় হাজারখানেক মানুষের মৃত্যু হয়।
৮৮৮৮ গণ-অভ্যুত্থানের তুলনায় মিয়ানমারের এখনকার নিরাপত্তা বাহিনী কম প্রাণঘাতী। চলমান বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত তিন জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার দেশটির মান্দালয় শহরে বিক্ষোভ চলাকালে সেনাবাহিনী ও পুলিশের গুলিতে দুই জনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর ছিল।
এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানী নেপিদোতে পুলিশের গুলিতে আহত হওয়া ২০ বছর বয়সী মিয়া থোয়াতে থোয়াতে খাইং বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে মারা যান।
মান্দালয়ে দুই জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দমেনি মিয়ানমারের জনগণ। পরের দিন রোববার মান্দালয় ও ইয়াঙ্গুনে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেয়।