বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্কুলশিক্ষকের বর্ণনায় উইঘুর বন্দিশিবিরে নির্যাতন

  •    
  • ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৫:০৫

বন্দিশিবিরে আসা ‘সুঠাম, শক্তসমর্থ ও উজ্জ্বল দৃষ্টির’ বন্দিরা অল্প দিনের মধ্যেই অসুস্থ ও দুর্বল হয়ে পড়ত বলে জানান সিদিক।

চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত বন্দিশিবিরে পড়ানোর প্রথম দিন অদ্ভুত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন কেলবিনার সিদিক। দেখতে পান, এক উইঘুর তরুণীকে স্ট্রেচারে করে ভবন থেকে বের করছে দুই সেনা।

বর্তমানে নেদারল্যান্ডসে অবস্থান করা সিদিক সিএনএনকে বলেন, ‘তরুণীটির মুখে কোনো প্রাণ ছিল না। তার দুই গাল ছিল ফ্যাকাশে। সে নিশ্বাস নিচ্ছিল না।’

বন্দিশিবিরের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা পরে সিদিককে জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তরুণীটি মারা গেছে। তবে কিসে তার মৃত্যু হয়েছে, তা সিদিককে জানাননি ওই পুলিশ।

বন্দিশিবিরে ধর্ষণ ও নির্যাতন নিয়ে পুরুষ সহকর্মীরা কীভাবে নিজেদের মধ্যে বড়াই করে বেড়াতেন, তা সিদিককে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। সিদিক বলেন, ‘রাতে যখন তারা মদ খেত, তখন কীভাবে বন্দিশিবিরের মেয়েদের তারা ধর্ষণ ও নির্যাতন করত, তা একে অপরকে বলাবলি করত।’

জাতিগতভাবে উজবেক সিদিক শিনজিয়াংয়ে বড় হন। ২৮ বছর ধরে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন। মূলত ৬ থেকে ১৩ বছর বয়সী শিশুরাই ছিল তার শিক্ষার্থী।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে সায়বাগ ডিস্ট্রিক্ট ব্যুরো অব এডুকেশন ভবনে এক বৈঠকে তাকে ডাকা হয় বলে জানান সিদিক। সেখানে তাকে বলা হয়, ‘অশিক্ষিতদের’ পড়াতে যাচ্ছেন তিনি।

সাবেক এই স্কুলশিক্ষক বলেন, ২০১৭ সালে শিনজিয়াংয়ের দুই বন্দিশিবিরে তিন মাস মান্দারিন ভাষা শেখাতে তাকে বাধ্য করা হয়।

ওই বছরের মার্চে বন্দিশিবিরে প্রথম ক্লাস নেয়া শুরু করেন সিদিক। ক্লাসে প্রায় ১০০ পুরুষ ও কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী ছিল। তিনি বলেন, ‘তারা যখন ক্লাসরুমে ঢোকে, দেখি তাদের হাত-পা শেকলে বাঁধা।’

সিদিক বলেন, ‘চকবোর্ডে লেখার জন্য পেছন ফিরলে তাদের কান্নার শব্দ শুনতে পাই। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি, পুরুষদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আর নারীরা জোরে শব্দ করে কাঁদছে।’

বন্দিশিবিরে আসা ‘সুঠাম, শক্তসমর্থ ও উজ্জ্বল দৃষ্টির’ বন্দিরা অল্প দিনের মধ্যেই অসুস্থ ও দুর্বল হয়ে পড়ত বলে জানান সিদিক।

দুই বন্দিশিবিরের একটিতে সিদিকের ক্লাসরুম ছিল বেসমেন্ট। সেখানে পড়ানোর সময় চিৎকারের শব্দ শুনতে পেতেন তিনি। চিৎকারের শব্দ কেন জানতে চাইলে এক পুরুষ পুলিশ সদস্য তাকে বলেন, বন্দিদের নির্যাতন করা হচ্ছে।

সিদিক বলেন, ‘বন্দিশিবিরে পড়ানোর সময় ভয়াবহ দুঃখজনক ঘটনা আমাকে দেখতে হয়েছে।’

বন্দিশিবিরের নির্যাতন নিয়ে সিদিকের বক্তব্য যাচাই করা সিএনএনের পক্ষে সম্ভব হয়নি।

বিভিন্ন সময়ে শিনজিয়াংয়ের বন্দিশিবিরে ধর্ষণ ও কাঠামোগত যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে সেখানে থাকা এক সময়ের বন্দি নারীরা।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অভিযোগ, গণ-আটক, নির্যাতন, জোরপূর্বক জন্মনিয়ন্ত্রণ ও গর্ভপাতের মতো দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে উইঘুরসহ অন্য জাতিগত মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে চীন।

এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে চীন সরকার। তাদের দাবি, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ বিরোধী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বন্দিশিবিরগুলোকে মূলত কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরো খবর