মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সেদেশের আরও বহু মানুষকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনগণ রাস্তায় নেমে এলে সামরিক বাহিনী এ নির্দেশ দেয়। এর আগের দিন বুধবার দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেয়ায় প্রায় ৫০০ মানুষ অভিযোগের মুখে পড়েছে। এদের অনেককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) বুধবার রাতে জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত দেশটির ৪৯৫ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হয়েছেন বা মামলার মুখে পড়েছেন।
গত দুই সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারে আটক, গ্রেপ্তার ও মামলার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এএপিপি।
এএপিপির পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিন জনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের আদালত।
সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন একজন আঞ্চলিক পরিবেশমন্ত্রী। তাকে মান্দালয় শহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চার জন ট্রেন অপারেটরসহ ছয় জনকে বন্দুকের মুখে সেনাবাহিনী তুলে নিয়েছে বলে জানা গেছে। রাখাইন রাজ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে মিয়ানমারের পুলিশ।
অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ধর্মঘটের ডাক দেয়ায় আট জন সরকারি কর্মচারিকে বুধবার বিচারের সম্মুখীন করা হয়।
মিয়ানমারের অভিনেতা লু মিন ফেসবুকে বলেন, ‘দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। জনগণের ক্ষমতা তাদের হাতেই ফিরিয়ে দিতে হবে।’
এ ছাড়া দ্য ডিফেন্ড ল’ইয়ার্সের ওয়েবসাইটে বলা হয়, সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেয়ায় কমপক্ষে ৪০ জন ব্যারিস্টারের নামে মামলা হতে পারে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে মিয়ানমারের অনেক আইনজীবী রেড রিবন ক্যাম্পেইনে যোগ দিয়েছেন।
এদিকে সেনাশাসনের অবসান ও নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবিতে মিয়ানমারের জনগণের বিক্ষোভ বৃহস্পতিবার ১৩তম দিনে পড়েছে।
এ দিন সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ হয় বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
রাজধানী নেপিদোতে বিক্ষোভে মোটরসাইকেলে অংশ নেন এক দল প্রকৌশলী। এ ছাড়া বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ শুরু করেছে শিক্ষার্থীসহ অনেকে। জাতিগত সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের শ্রমিকরাও বিক্ষোভে অংশ নেবে বলে জানা গেছে।