বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুবাইয়ের প্রাসাদে বন্দি রাজকন্যা, জেরা করবে জাতিসংঘ

  •    
  • ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৯:১৯

নতুন জীবনের আশায় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুবাই থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন রাজকুমারী লতিফা। পরে বন্ধুদের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি নিজের বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। বলেছিলেন যে তাকে ‌‌লজিম্মি' করে রাখা হয়েছে এবং নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছেন।

দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের বিরুদ্ধে তার মেয়ে রাজকুমারী লতিফাকে আটকে রাখার অভিযোগ খতিয়ে দেখবে জাতিসংঘ। রাজকুমারীর বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

লতিফার বাবা শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রপ্রধানদের একজন। দুবাইয়ের শাসক হওয়ার পাশাপাশি তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শাসনব্যবস্থায় ভিন্নমত মেনে নিতে পারেন না। তার বিচারব্যবস্থাও বৈষম্যমূলক।

রানী এলিজাবেথের সঙ্গে শেখ মোহাম্মদ

এমন প্রেক্ষাপটে নতুন জীবনের আশায় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুবাই থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন লতিফা। পরে বন্ধুদের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি নিজের বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। বলেন, তাকে ‘জিম্মি' করে রাখা হয়েছে এবং তিনি নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছেন।

শেখ পরিবারে বাড়ি পালানোর ঘটনা এই প্রথম না। ২০০২ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন লতিফা। সে সময় আমিরাত-ওমান সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে আসা হয় লতিফাকে। তার আগে ২০০০ সালে লতিফার বড় বোন শামসা বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন। এক মাস পর তাকে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ থেকে আটক করে দুবাই ফেরত আনা হয়েছিল।

বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানকে ওই ফুটেজ সরবরাহ করেন রাজকুমারী লতিফা আল মাকতুমের বন্ধুরা। সেখানে রাজকুমারী বলেন, তিনি নৌকায় করে পালিয়ে যাওয়ার পর ভারত মহাসাগর থেকে কমান্ডোরা তাকে অচেতন করে আবার 'বন্দিশালায়' নিয়ে আসে। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন। বাথরুম থেকে বন্ধুদের কাছে গোপনে ভিডিও পাঠিয়ে তিনি তার বন্দিদশার কথা জানান। তবে হঠাৎ করে সেই গোপন ভিডিও আসাও বন্ধ হয়ে যায়।

এ অবস্থায় জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেন লতিফার বন্ধুরা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে জাতিসংঘকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এবার সে আহ্বানে সাড়া দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।

হাইকমিশনারের কার্যালয় লতিফার বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নিচ্ছে। বিবিসি জানিয়েছে, লতিফার ভিডিওগুলো বিশ্লেষণের পর জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন আরবিটারি ডিটেনশনের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করা হবে।

দুবাই এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এর আগে দাবি করেছিল, লতিফা তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে নিরাপদেই রয়েছেন। জাতিসংঘের সাবেক মানবাধিকার কমিশনার ও আয়ারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসনের সঙ্গে ২০১৮ সালে প্রিন্সেসের সাক্ষাৎ হয়েছিল। এর ৯ দিন পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিনসনের সঙ্গে লতিফার ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছিল, রাজকুমারী সুস্থ এবং নিরাপদে আছেন।

মেরি রবিনসনের সঙ্গে রাজকুমারী শেখ লতিফা

এখন রবিনসন বলছেন যে লতিফার পরিবার তাকে ‘ভয়াবহ ধোঁকা দিয়েছে।' রবিনসন প্যানোরামা অনুষ্ঠানে বলেন, তাকে এর আগে বলা হয় যে, লতিফার বাইপোলার ডিসঅর্ডার নামক মানসিক রোগ রয়েছে, যা আসলে তার ছিল না।

২০১৯ সালে দুবাইয়ের ক্ষমতাসীন পরিবারের বিষয়টি ইংল্যান্ডের হাইকোর্টের সামনে উন্মোচিত হয়।

আইনজীবীর সঙ্গে হাইকোর্টে প্রিন্সেস হায়া

সে সময় শাসক শেখ মোহাম্মদের স্ত্রী ও লতিফার সৎ মা প্রিন্সেস হায়া তার দুই সন্তান নিয়ে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে আসেন। তিনি নিজেদের সুরক্ষা ও নিপীড়িত না হওয়ার অধিকার চেয়ে শেখের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেন।

এ বিভাগের আরো খবর