‘আপনারা (ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ) দুই বা তিন ট্রিলিয়ন (ডলার) মূল্যের সংস্থা হতে পারেন, তবে মানুষের কাছে তাদের নিজস্ব গোপনীয়তার মূল্য অর্থের থেকে অনেক বেশি। আমাদের দায়িত্ব জনগণের নিজস্ব গোপনীয়তা নিশ্চিত এবং তা রক্ষা করা।’
সোমবার একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এদিন শুনানি শেষে মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ-এর নতুন গোপনীয়তা নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার, ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপকে নোটিশ দিয়েছে।
মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশনটির ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের তুলনায় ভারতীয়দের গোপনীয়তা নিম্নমানের–এ অভিযোগ তুলে চার সপ্তাহের মধ্যে আদালত সরকার ও মেসেজিং অ্যাপের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া চেয়েছে।
ভারতে হোয়াটসঅ্যাপকে তার নতুন গোপনীয়তা নীতি বাস্তবায়ন থেকে বিরত রাখতে চাওয়ার আবেদনের ওপর নির্ভর করে শীর্ষ আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, এই অ্যাপে গোপনীয়তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে।
শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘মানুষের গুরুতর আশঙ্কা রয়েছে যে, তারা তাদের গোপনীয়তা হারাবে এবং তাদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকার মৌলিক অধিকার।’
প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১৭ সালের কার্মন্য সিং সারিন ও শ্রেয়া শেঠির আবেদন নিয়ে সরকার এবং ফেসবুকের মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপকে নোটিশ দিয়েছে। বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন এ এস বোপান্না এবং ভি রামাসুব্রমনিয়ান।
যদিও ব্যবহারকারীদের ডেটা ভাগ করে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে হোয়াটসঅ্যাপ সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে, একই গোপনীয়তা নীতি ইউরোপীয় দেশগুলি বাদে সারা বিশ্বে প্রযোজ্য, যা বিশেষ ডেটা সুরক্ষা আইনেই রয়েছে। গোপনীয়তার বিষয়ে ইউরোপের একটি বিশেষ আইন রয়েছে। ভারতে যদি এই আইন থাকে, তবে তাও অনুসরণ করা হবে।
মামলার আবেদনকারীদের পক্ষে বিশিষ্ট আইনজীবী শ্যাম দিভান ভারতে ডাটা সুরক্ষা আইন তৈরির আবেদন জানান। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে আইনজীবী শ্যাম দিভানের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান।