ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ মানবে না কংগ্রেস। রোববার ভারতের অসম রাজ্যে দলীয় সভায় এমন ঘোষণা দিলেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধি।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অসম, কেরালা, তামিলনাডু ও পুডুচেরিতে সামনেই বিধানসভা ভোট। ভোটের দিনক্ষণ অবশ্য ঘোষণা হয়নি এখনও। কিন্তু ভোট প্রচারে ইতোমধ্যেই প্রচারে নেমেছে সব পক্ষ।
রোববার অসমে ভোট প্রচারে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল। তিনি জানান, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে সিএএ মানবে না। কোনো অবস্থাতেই বাস্তবায়িত করা হবেনা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
উল্লেখ্য, ভারতের শাসক দল বিজেপি নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে। নতুন আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু শরণার্থীরা শর্তসাপেক্ষে নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
মুসলিমরা বাড়তি সুবিধা পাবেন না। এই সুবিধা পাবেন শুধুমাত্র হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিষ্টান, পারসিক ও জৈনরা। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরকে ধরা হয়েছে ভিত্তি বছর। তবে আইন হলেও এখনও কার্যকর হয়নি সিএএ।
অসমসহ গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চল জুড়ে চলছে ২০১৯ সালের এই আইন বাতিলের দাবি। বিভিন্ন আঞ্চলিক দল এই আইনের তীব্র বিরোধী। তাদের মতে, নয়া সংশোধনীর ফলে অনুপ্রবেশ বাড়বে। স্থানীয়রা হারাবে তাদের অধিকার।
পশ্চিমবঙ্গে আবার দাবি উঠছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী কার্যকর করতে হবে। এই নিয়ে বেশ চাপে রয়েছে বিজেপি। তারা আগে সিএএ কার্যকর করা হবে বলেই বাংলায় ভোটে জিতেছিল।
এই পরিস্থিতিতে এদিন রাহুল গান্ধি সিএএ বাতিল করার কথা বলে অসমিয়াদের মন জয়ের চেষ্টা করেন। সেইসঙ্গে রাহুল জাতপাতের রাজনীতির বদলে এদিন ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও বার্তা দেন।
অসমে বিভিন্ন ভাষা ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর বসবাস। রাজ্যে ৩৭ শতাংশেরও বেশি মুসলমান রয়েছেন। বাংলাভাষী মানুষ রয়েছেন ৪০ শতাংশেরও বেশি। এছাড়াও অন্য ধর্ম ও ভাষা গোষ্ঠী রয়েছে।
অসমের মিশ্র সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাও বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে দেন রাহুল। বিজেপি বিভাজনের রাজনীতি করছে বলেও তার অভিযোগ।
রাহুলের ভাষণে বেশ চাঙ্গা কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা পার্থরঞ্জন চক্রবর্তীর দাবি, কংগ্রেস জিতছেই। রাহুল গান্ধি দলের জয়ের পথ প্রশস্ত করেছেন এদিনের সভায়।
উল্লেখ্য, আঞ্চলিক ও বামদলকে সঙ্গে নিয়ে কংগ্রেস এবার অসমে মহাজোটবন্ধন করেছে। বিজেপিও অবশ্য একই জোট ধর্মেই এবারও বাজিমাত করার চেষ্টা করছে।