পাকিস্তানে চিড়িয়াখানায় জানুয়ারির শেষে মারা যাওয়া দুটি সাদা বাঘের মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না দুই সপ্তাহ পর। যদিও এখন ধারণা করা হচ্ছে, ছানা দুটি দুনিয়া কাঁপানো ভাইরাস করোনাতে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে।
এই ধারণা করার কারণ হলো, ব্যাঘ্র শাবক দুটির ফুসফুসই গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিল। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে রোগ কোভিড নাইনটিনে আক্রান্ত হলে এই চিত্র দেখা যায়।
গত ৩০ জানুয়ারি লাহোর চিড়িয়াখানায় মারা যায় দুটি শিশু বাঘ। মারা যাওয়ার চারদিন আগে থেকে ‘ফেলাইন প্যানলিউকোপেনিয়া’ ভাইরাসের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল তাদেরকে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, পাকিস্তানে বিড়ালগোত্রীয় প্রাণীদের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা প্রায় নিয়মিত।
তবে মৃত্যুর পরে ময়নাতদন্তে দেখা যায়, বাঘ দুটির ফুসফুস গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত ছিল।
যদিও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে চিড়িয়াখানার উপ-পরিচালক কিরণ সেলিম জানান, শিশু বাঘ দুটো কোভিড নাইনটিনে আসলেই আক্রান্ত হয়েছিল কি না- তা নিশ্চিত হতে কোনো পিসিআর টেস্ট করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘শিশু বাঘ দুটির মৃত্যুর পর চিড়িয়াখানার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ছয় জন পজিটিভ শনাক্ত হন, যাদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা বাঘ দুটি দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন।
‘ফলে সবমিলিয়ে মৃত বাঘ দুটির ফুসফুসের অবস্থা দেখে বাচ্চা দুটির কোভিড নাইনটিনে আক্রান্ত হওয়ার ধারণা আরও পোক্ত হয়েছে।’
ধারণা করা হচ্ছে, যে কর্মীর হাত থেকে বাচ্চা দুটি খাবার খেত, তার মাধ্যমেই ছোঁয়াচে ভাইরাসটি ছড়িয়েছে।
করোনা মহামারিতে ১২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে পাকিস্তানে। ভাইরাসটি থেকে মানুষের সুরক্ষায় বিশ্বজুড়ে নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও অন্যান্য প্রাণীদের বিষয়টি অবহেলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন প্রাণী অধিকার কর্মীরা।
নিম্নমানের অবকাঠামো ও অব্যস্থাপনার ফলে প্রাণীদের ভোগান্তির কারণে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচিত পাকিস্তানের চিড়িয়াখানাগুলো।
২০২০ সালে পেশোয়ার চিড়িয়াখানায় মারা যায় চারটি জিরাফ। একই বছর খাঁচায় আগুন ধরে যাওয়ায় দমবন্ধ হয়ে প্রাণ যায় দুটি সিংহের।
গত ডিসেম্বরে ইসলামাবাদ চিড়িয়াখানার দুটি হিমালয়ান বাদামি ভাল্লুককে বিমানে করে জর্ডানের অভয়ারণ্যে নেয়া হয়।
এর কয়েক সপ্তাহ আগে কাভান নামের একটি হাতিকে উদ্ধার করে কম্বোডিয়ার অভয়ারণ্যে ছেড়ে দেয়া হয়।