বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি

  •    
  • ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৮:০৪

বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান উপেক্ষা করে স্বৈরশাসনবিরোধী স্লোগান দিতে ভয় পাচ্ছে না আন্দোলনকারীরা। সেনাদের হটিয়ে অং সান সু চিসহ গণতন্ত্রপন্থি নেতাদের মুক্ত না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে বদ্ধপরিকর তারা।

মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদ সহিংস বিক্ষোভে রূপ নিচ্ছে। সেনাবাহিনী বা পুলিশের কোনো বাধাকেই পাত্তা দিচ্ছেন না আন্দোলনকারীরা।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাস্তায় নামায় রাজধানী নেপিদোয় মঙ্গলবার কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীর ওপর রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এ সময় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়।

বিবিসি লিখেছে, এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা গুরুতর।

অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে সোমবার নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করে দেশটির জান্তা সরকার। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে দেশটির সামরিক প্রশাসক মিন অং হ্লাইং বলেন, নভেম্বরে কারচুপি করে জাতীয় নির্বাচনে জিতেছে সু চির দল ন্যাশলান লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। নতুন করে নির্বাচন দেয়া হবে। ক্ষমতা বুঝিয়ে দেয়া হবে নির্বাচিতদের হাতে।

এদিনই মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে আরোপ করা হয় কারফিউ। সেই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা অবরোধ ছেড়ে দিতে বলা হয়। অন্যথায় শক্তি প্রয়োগ করে তাদের হটানো হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়।

সামরিক প্রশাসক অবশ্য বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে সরাসরি কিছু বলেননি। শুধু জানিয়েছেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

কী ঘটেছে নেপিদোয়

কোনো ধরনের বিধিনিষেধ আমলে না নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানী নেপিদোয় রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী। তাদের বিরুদ্ধে শুরুতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।

রয়টার্স জানিয়েছে, জলকামান উপেক্ষা করে সেনা স্বৈরশাসকবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে আকাশে গুলি ছুড়ে তাদের সতর্ক করে পুলিশ। এতেও কাজ না হওয়ায় সরাসরি রাবার বুলেট ব্যবহার করা হয়।

নেপিদোর এক চিকিৎসকের বরাতে বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, মাথা ও বুকে জখম নিয়ে তাদের হাসপাতালে দুই বিক্ষোভকারী ভর্তি আছেন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

অন্য একটি হাসপাতালের চিকিৎসক রয়টার্সকে জানান, রাবার বুলেট বিদ্ধ তিন জন তাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া প্রতিনিধি জনাথন হেড জানিয়েছেন, কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে দেখা গেছে পুলিশকেও। এসব জায়গায় ব্যারিকেড সরিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ করে দেন তারা।

এর আগে, দুইবার সেনা অভ্যুত্থান হয়েছিল মিয়ানমারে। ১৯৮৮ ও ২০০৭ সালের দুটি অভ্যুত্থানে অনেক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছিলেন পুলিশের গুলিতে।

বিক্ষোভকারীরা কী বলছেন

বিবিসি বার্মিজকে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘পাঁচ জনের বেশি মানুষের সমাগমে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা আমরা জানি। তারপরও প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। ইয়াঙ্গুনে জাতিসংঘের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি।’

আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা তরুণরা দেশের ভবিষ্যৎ। এই অন্যায় আমরা মেনে নিতে পারি না। যত দিন না আমাদের মা সু চি এবং প্রেসিডেন্ট মিন উইন্টকে মুক্ত করতে পারব, তত দিন আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

মানবাধিকার প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সু চি সমালোচনার মুখে পড়লেও, দেশে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি বরং বেড়েছে। সবশেষ নির্বাচনেও তার প্রমাণ মিলেছে। গত নভেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় সু চির দল এনএলডি।

যা বলছে সেনাবাহিনী

অভ্যুত্থানের সপ্তম দিনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে দাবি করে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা তুলে ধরেন তিনি।

ভাষণে মিয়ানমার সেনাপ্রধান জানান, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নতুন নির্বাচন দেয়া হবে। শান্তিপূর্ণ উপায়ে হস্তান্তর হবে ক্ষমতা।

নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তারা বলছে, অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ দিতে পারেনি সেনাবাহিনী। ভাষণে সেনাপ্রধান আরও জানান, তার সরকার অন্য জান্তা সরকারের চেয়ে ভিন্ন হবে। মিয়ানমারে দীর্ঘ ৪৯ বছরের জান্তা শাসনের অবসান হয়েছিল ২০১১ সালে।

১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন গ্রেপ্তারের পর গৃহবন্দি করা হয় অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট মিন উইন্টসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের।

এ বিভাগের আরো খবর