করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালের গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়লেও পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধকরণে ঠিকই কাজ চালিয়ে গেছে উত্তর কোরিয়া। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশটি তাদের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম আরও সমৃদ্ধ করেছে।
এ বিষয়ে জাতিসংঘের একটি গোপন প্রতিবেদন হাতে এসেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে। এতে বলা হয়েছে, ‘পিয়ংইয়ং পারমাণবিক অস্ত্রের উপকরণ, পারমাণবিক অস্ত্রের অন্যান্য আনুষঙ্গিক এবং তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে।’
এসব প্রকল্পের জন্য উত্তর কোরিয়া এখনও বিদেশি উপকরণ ও প্রযুক্তি আনার সন্ধানে আছে। এ ছাড়া, ২০২০ সালে সাইবার হামলার মাধ্যমে দেশটি প্রায় ৩০ কোটি ডলার চুরি করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক দপ্তরের এক মুখপাত্র সোমবার জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে নতুন করে ভাবার পরিকল্পনা রয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কার্যক্রম নিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের মধ্যে তিনবার বৈঠক হয়েছিল।
কিন্তু তাদের আলোচনা ব্যর্থ হয়। পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়তে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আহ্বানেই সাড়া দেয়নি পিয়ংইয়ং। আর উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকেও প্রত্যাহার করা হয়নি কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা।
জাতিসংঘের প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, গত বছর উত্তর কোরিয়া তাদের সামরিক কুচকাওয়াজে স্বল্প পাল্লা, মধ্য পাল্লা, সাবমেরিন ও আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে।
প্রতিবেদনে নাম উল্লেখ না করে একটি দেশের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আকার তুলে ধরে দেশটি বলেছে, ‘এসব পারমাণবিক অস্ত্র হতে পারে জোর ধারণা’। এসব অস্ত্র দূরপাল্লা, মাঝারি পাল্লা ও স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হতে পারে।
২০২০ সালে উত্তর কোরিয়াকে কোনো ধরনের পারমাণবিক বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে শোনা যায়নি। অবশ্য পিয়ংইয়ং নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড ও কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়নের ঘোষণা দিয়েছিল।
তবে পারমাণবিক অস্ত্রের সমৃদ্ধকরণ প্রতিবেদন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মিশনের উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি।