অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) নির্বাচিত নেতাদের গ্রেপ্তার করে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে আন্দোলন। প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে দেশজুড়ে।
গত কয়েক দিনের মতো রোববারও ইয়াঙ্গুনসহ বিভিন্ন শহরে দেখা গেছে বিক্ষোভ। এতে মানুষজনের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এনএলডির পতাকার সঙ্গে মিলিয়ে লাল রঙের বেলুন হাতে ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীদের স্লোগান ছিল- ‘আমরা সামরিক একনায়কতন্ত্র নয়, গণতন্ত্র চাই!’
মিয়ো উইন নামে এক বিক্ষোভকারী এএফপিকে বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশও ছিল প্রস্তুত। ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের রাস্তায় ট্রাক নিয়ে দাঙ্গা মোকাবিলায় বিশেষ পোশাকে সজ্জিত পুলিশদের অবস্থান নিতে দেখেছেন বিবিসির প্রতিবেদক।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা শনিবার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভের কিছু চিত্র দেখা গেছে।
সেখানে ইয়াঙ্গুনের তীব্র রোদের মধ্যে জ্যামে আটকে থাকা গাড়ির পাশ দিয়ে কিছু বিক্ষোভকারীকে রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়। তাদের হাতে ছিল সু চির দল এনএলডির পতাকা। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে ওঠা তিন আঙুল দিয়ে স্যালুটের ভঙ্গিও করছিলেন তারা।
অনেক গাড়ি চালক হর্ন বাজিয়ে এবং যাত্রীরা সু চির ছবি উঁচিয়ে ধরে এ সময় তাদের সমর্থন জানান।
১০ জন বন্ধুর সঙ্গে বিক্ষোভে অংশ নেয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা এই অভ্যুত্থানকে মেনে নিতে পারি না। ভবিষ্যতের জন্য আমাদেরকে বেরিয়ে আসতেই হবে।’
পরিবার নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক নারী জানান, তিনি প্রথম দিনই বিক্ষোভে অংশ নিতে চেয়েছিলেন, তবে ভয়ের কারণে পারেননি। বলেন, ‘আমাদের জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে, আমরা গণতন্ত্র চাই।’
দ্বিতীয় দিনে মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের উপকূলীয় শহর মালামইয়ানে অন্তত ১০০ জনকে মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা গেছে। মধ্য মিয়ানমারের মান্ডালে শহরে ছাত্র ও চিকিৎসকরা জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানায়।
দক্ষিণ-পূর্বের কারেন রাজ্যের পাইথনজু শহরে একটি পুলিশ স্টেশনের বাইরে রাত কাটান কয়েক শ মানুষ। স্থানীয় এনএলডির সাংসদদের গ্রেপ্তারের তথ্য পেয়ে তারা সেখানে জড়ো হন। সকালে তাদের গণতন্ত্রপন্থি বিভিন্ন গান গাইতে দেখা যায়।