ইন্দোনেশিয়ায় সব সরকারি স্কুলে ধর্মীয় পোশাক পরার বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হয়েছে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কট্টর সব বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার।
জানুয়ারি মাসে ১৬ বছর বয়সী এক খ্রিস্টান শিক্ষার্থীকে স্কুলে হিজাব পরতে জোর করার খবর ভাইরাল হওয়ার পর বুধবার এই সিদ্ধান্ত নেয় ইন্দোনেশিয়া সরকার।
ইন্দোনেশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ইয়াকুত চুলিল বলেন, ‘ধর্ম কখনো সংঘর্ষকে সমর্থন করে না। অন্য ধর্মে বিশ্বাসীদের মূল্যবোধেও আঘাত হানতে পারে না।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্যাডাং শহরের একটি কারিগরি স্কুলে এক খ্রিস্টান শিক্ষার্থীকে হিজাব পরতে প্রতিদিনই বলা হতো। ওই ছাত্রী হিজাব পরতে অস্বীকৃতি জানালে স্কুল কর্তৃপক্ষ তার বাবা-মাকে ডেকে পাঠায়। শিক্ষকদের সঙ্গে সে বৈঠকের ভিডিও গোপনে ধারণ করে অনলাইনে ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীর বাবা।
ভিডিওতে দেখা গেছে, স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের বলছে সব নারী শিক্ষার্থীর জন্য স্কুলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। তা সে যে ধর্মের অনুসারী হোক না কেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বিবিসিকে বলেন, প্রায় প্রতিদিনই আমার মেয়ে হিজাব পরা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ত। সে বরাবরই উত্তর দিত আমি মুসলিম না।
‘মেয়েকে যদি আমি হিজাব পরতে বাধ্য করি তবে তা আমার মেয়ের পরিচয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়। আমার ধর্মীয় অধিকার কই? মোটের ওপর এটা তো একটা সরকারি স্কুল।’
পরে অবশ্য স্কুলের প্রিন্সিপাল সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমা চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এখন থেকে স্কুলে যার যার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী পোশাক পরতে দেওয়া হবে।
এ প্রশ্নে ইন্দোনেশিয়ার সংস্কৃতি ও শিক্ষামন্ত্রী নাদিম মাকারিম জানান, ধর্মীয় পোশাক পরা ব্যক্তিগত পছন্দ। এটা স্কুলের নয়।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইন্দোনেশিয়ায় রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম হলেও দেশটিতে ছয়টি ধর্মের স্বীকৃতি রয়েছে।