প্যারোলের শর্ত অমান্যের দায়ে রাশিয়ার প্রধান বিরোধী দলের নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনিকে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাজধানী মস্কোর একটি আদালত এ দণ্ড দেয়।
নাভালনির আইনজীবীর বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মস্কোর ওই আদালত নাভালনিকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিলেও তাকে মূলত দুই বছর আট মাস কারাভোগ করতে হবে। কারণ বাকি ১০ মাস তিনি গৃহবন্দিই ছিলেন।
নাভালনির আইনজীবী অলগা মিখাইলোভা ও ভ্লাদিমির কোবজেভ জানান, নাভালনির সাজার বিষয়ে মানবাধিকারবিষয়ক ইউরোপিয়ান আদালতে আবেদনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, রায়ের পর নাভালনির হাজার হাজার সমর্থক মস্কোতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। একপর্যায়ে দাঙ্গা পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
মনিটরিং গ্রুপ ওভিডি-ইনফোর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়াজুড়ে রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নাভালনির কারাদণ্ডের প্রতিবাদে মস্কোয় বিক্ষোভ। ছবি: এএফপি
বিক্ষোভ আরও বাড়ার আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় তিনটি স্টেশন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মস্কো মেট্রো।
এদিকে রাশিয়া সরকারের প্রতি নাভালনিকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানান, মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে মিলে রাশিয়াকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
২০১৪ সালে অর্থ তছরুপের মামলায় কারাদণ্ড হয় রাশিয়ার বিরোধী দল ‘রাশিয়া অফ দ্য ফিউচারের’ নেতা নাভালনির। এতদিন তিনি প্যারোলে ছিলেন।
পাঁচ মাস জার্মানিতে চিকিৎসা শেষে ১৭ জানুয়ারি দেশে ফেরার পরপরই মস্কোর শেরেমিতিয়েভো বিমানবন্দরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাহিনীটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্যারোলের শর্ত ভঙ্গ করায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়। সাইবেরিয়ার একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে জরুরি চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার জন্য রুশ সরকারকে দায়ী করে আসছেন নাভালনি ও তার সমর্থকরা।