চলমান কৃষক আন্দোলন নিয়ে আলোচনার দাবিতে মঙ্গলবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিক্ষোভ দেখালেন বিরোধী দলের সাংসদরা। বিরোধীদের প্রবল বিক্ষোভে দফায় দফায় মুলতবি রাখতে হয় অধিবেশন।
কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকেসহ বিরোধী দলগুলো এদিন দুমাসেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনার জন্য দিনের কার্যসূচি স্থগিত করার দাবি জানায়। উপরাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডু সেই দাবি খারিজ করায় বিরোধীরা অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন।
বিরোধী দলগুলো রাজ্যসভার ২৬৭ বিধি অনুসারে নোটিশ দিয়ে বলেছিল, দিল্লির সীমান্তে কৃষকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করতে দিনের অন্যান্য কার্যসূচি স্থগিত রাখা হোক।
অধিবেশন শুরু হওয়ার পর ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, বিভিন্ন সদস্যের কাছ থেকে তিনি ২৬৭ বিধি মোতাবেক নোটিশ পেয়েছেন। তবে সংসদের উভয় সভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণকে ধন্যবাদ দেওয়ার বিষয়ে যে আলোচনা হবে, তখন সদস্যরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারেন। সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর সময় রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে কৃষক আন্দোলনের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
ভেঙ্কাইয়া নাইডুর আবেদন মানতে অস্বীকার করেন বিরোধী সাংসদরা। এরপর যে সদস্যরা নোটিশ দিয়েছিলেন, তাদের খুব সংক্ষিপ্ত আকারে বিষয়টি উল্লেখ করার অনুমতি দেন নাইডু।
বিরোধী দলনেতা ও কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা গোলাম নবী আজাদ বলেছেন, কৃষকেরা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে জাতীয় সড়কে অবস্থান করছেন এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, সরকার ও কৃষকদের মধ্যে কী চলছে, তা নিয়ে সংসদ অবগত নয় এবং বিষয়টি নিয়ে পৃথক আলোচনা হওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘আমরা কৃষক আন্দোলন নিয়ে নির্দিষ্ট বিষয় হিসেবেই আলোচনা চাই।’
সিপিআই নেতা এলামরাম করিম বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের পানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ কেটে দেওয়া হয়েছে। ডিএমকের তিরুচি শিভা জানিয়েছেন, কৃষকরা তীব্র শীতে দুই মাস ধরে রাস্তায় বসে আছেন এবং বিষয়টি নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করা দরকার।
রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মনোজ ঝা বলেন, কৃষকদের আন্দোলন একটি জ্বলন্ত সমস্যা। স্বাভাবিকভাবেই সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ভেঙ্কাইয়া নাইডু বিরোধীদের প্রস্তাব, দাবি নাকচ করে দেন। প্রতিবাদে কংগ্রেস, বাম, টিএমসি, ডিএমকে এবং আরজেডি সদস্যরা অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন।