অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী যে টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত হচ্ছে তা নিতে যাচ্ছে দেশটির বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তানও।
ভারতে উৎপাদিত এই টিকার এক কোটি ৭০ লাখ ডোজ পাওয়ার বিষয়টি পাকিস্তান নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহযোগী ফয়সাল সুলতান।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই টিকার ৭০ লাখ ডোজ এবং প্রথমার্ধে পুরো টিকা দেশে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তবে এই টিকা ভারত থেকে সরাসরি নিচ্ছে না পাকিস্তান। দেশটি এই টিকা নেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে ন্যায্যতার ভিত্তিতে টিকা বণ্টনের জন্য গড়ে তোলা কোভ্যাক্স জোটের মাধ্যমে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী বেশ কিছু টিকা এরই মধ্যে প্রয়োগ চলছে বিশ্বজুড়ে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার, মডার্না, রাশিয়ার স্পুৎনিক, চীনের সিনোভ্যাক্সের তুলনায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে বেশি দেশের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
এই টিকা ‘কোভিশিল্ড’ নামে উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। নয়াদিল্লি এরই মধ্যে এই টিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশে। এই তালিকায় পাকিস্তানকে রাখেনি নরেন্দ্র মোদির সরকার।
ভারত থেকে টিকা পেতে খুব একটা তৎপরতা চালায়নি পাকিস্তানও। অন্যসব বিষয়ের মতো ইমরান খান সরকার টিকা ইস্যুতেও চীনের ওপর নির্ভর করে আসছিল। সহায়তার হাত বাড়িয়েছে বেইজিংয়েও।
সিনোভ্যাক্সের টিকার ৫ লাখ ডোজ পাকিস্তানকে উপহারও দিচ্ছে চীন। চীন থেকে উপহারের টিকার পাঁচ ডোজের প্রথম চালান আনতে দেশটিতে রোববার বিশেষ একটি বিমান পাঠিয়েছে পাকিস্তান।
এর সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তথা ভারতে উৎপাদিত কোভিশিল্ড টিকার এক কোটি ৭০ লাখ পাওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করলেন ইমরান খানের বিশেষ সহযোগী ফয়সাল সুলতান।
তিনি বলেন, ‘সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা ছাড়াও অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রায় ৭০ লাখ ডোজ বছরের প্রথম প্রান্তিতে আনা যাবে। এই টিকা দেয়া হবে বিনামূল্যে! দেশে টিকাপ্রদান শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহ থেকে, শুরুতে টিকা দেয়া হবে সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের।’
টিকা বিষয়ে টুইট করেছেন পাকিস্তানের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও বিশেষ উদ্যোগ বিষয়ক মন্ত্রী আসাদ ওমরও। তবে তিনি জানান, টিকা পেতে তারা কোভ্যাক্সের সঙ্গে আট মাস আগে চুক্তি করেছিলেন তারা। এক কোটি ৭০ লাখ ডোজের মধ্যে ৬০ লাখ পাওয়া যাবে মার্চের মধ্যে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ সহকারী ফয়সাল সুলতান এক বিবৃতিতে জানান, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগের জন্য এরই মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, ‘যদিও অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা ভারতে উৎপাদিত হচ্ছে, এটা আসবে আন্তর্জাতিক জোট কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। এই জোট পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশকে ফ্রি টিকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।’