পাকিস্তানে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে সামনের সপ্তাহে। চীন উদ্ভাবিত টিকা দিয়ে শুরুতে বিনা মূল্যে দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেয়া হবে।
অন্যদিকে বিশ্বের প্রায় ৬০ শতাংশ টিকা প্রস্ততকারী দেশ ভারত চলতি মাসের মাঝ বরাবর বৃহত্তম করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার সহযোগিতায় কোভিশিল্ড তৈরি করছে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া।
এ টিকার লাখ লাখ ডোজ বিনা মূল্যে উপহার হিসেবে পার্শ্ববর্তীসহ বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করেছে ভারত, যাকে ‘টিকা কূটনীতি’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। কিন্তু ভারতের উপহারের তালিকায় পাকিস্তানের নাম নেই।
পাকিস্তান তার ২২ কোটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে কমপক্ষে ৭০ শতাংশকে বিনা মূল্যে করোনার টিকা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। দেশটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা জরুরি ব্যবহারের জন্য করোনার তিনটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা, চীনের সিনোফার্ম ও রাশিয়ার স্পুটনিক ভি রয়েছে।
চীনের আরেকটি টিকা ক্যানসিনো বায়োলজিক্স পাকিস্তানে চূড়ান্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে।
পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৩০ হাজার মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে মৃত্যু হয়েছে ১১ হাজার ৫১৪ জনের।
পাকিস্তানকে সিনোফার্মের পাঁচ লাখ ডোজ বিনা মূল্যে দেয়ার অঙ্গীকার করেছে চীন।
করাচিভিত্তিক টিকা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিন্ধ মেডিক্যাল স্টোর্সের কর্মকর্তা উসমান গণি বিবিসির সাংবাদিক সৌতিক বিশ্বাসকে বলেন, ‘চীনের এ পাঁচ লাখ ডোজ কিছুই নয়। আমাদের আরও টিকা দরকার।’
বিরোধপূর্ণ সম্পর্কের পরও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ওষুধ বাণিজ্য বেশ স্থিতিশীল। ২০১৮ সালে ৬ কোটি ২০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ওষুধ পাকিস্তানে রপ্তানি করে ভারত।
পাকিস্তানে বিক্রি হওয়া ওষুধের ৬০-৭০ শতাংশ উপাদান ভারত থেকে আমদানি করা হয়।
গণি বলেন, ‘পাকিস্তানে যেসব টিকা পাওয়া যায়, তার প্রায় ৯০ শতাংশই ভারত থেকে আসে। ভারতের টিকা বিশ্বমানের, সাশ্রয়ী ও স্থানান্তর সহজ। এসব টিকা প্রতি বছর ১ কোটি ৪০ লাখ নবজাতক ও গর্ভবতী নারীদের দেয়া হয়।’
পাকিস্তান নিকট ভবিষ্যতে ভারতের টিকা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন গণি।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভারত এরই মধ্যে অনেক টিকার অর্ডার পেয়েছে। টিকা প্রস্তুতকারক এ দেশটির সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পর্ক রয়েছে। ভারত থেকে টিকা পেতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। তবে এর জন্য সময় লাগবে।’
এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ভারতে তৈরি করোনার টিকা পেতে পাকিস্তান কোনো ধরনের অনুরোধ করেছে বলে জানা নেই।