মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে দেশের সব ভূমিহীনদের বাড়ি দেয়ার বাংলাদেশ সরকারের প্রকল্পের প্রশংসা করে সংবাদ ছাপিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি।
আনাদুলু এই প্রকল্পকে বলছে, বিনা মূল্যে বিশ্বের বৃহত্তম আবাসন প্রকল্প। আর এই বিষয়টিই তারা শিরোনামে তুলে ধরেছে।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না- এই প্রকল্পের আওতায় সরকার প্রায় ৯ লাখ গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারকে ঘর দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে শনিবার ৬৬ হাজারেরও বেশি গৃহহীনের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়। এদের নিজের কখনও ঘর ছিল না। কেউ মানুষের ঘরে, কেউ ফুটপাতে, কেউ গোয়াল ঘরে, কেউ বারান্দায় রাত কাটাতেন। ঘর পেয়ে মানুষগুলো আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। কেউ কেঁদেছেন, কেউ হেসেছেন, কেউ দোয়া করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।
আনাদুলুর সংবাদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়। তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষ ও আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির বছরে বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।’
শুধু ঘর নয়, ভূমির মালিকানাও দেয়া হচ্ছে ভূমিহীনদের। প্রত্যেককে তার জমি ও ঘরের দলিল নিবন্ধন ও নামজারিও করে দেয়া হচ্ছে।
গৃহহীনদের সরকারের দেয়া বিনামূল্যে ঘরগুলো ছিমছাম। ছবি: পিআইডি
ঘরগুলো ছিমছাম। প্রতিটি ঘরে থাকছে দুটি শয়ন কক্ষ, একটি লম্বা বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট। এসব ঘরের জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। পরিবারগুলোর কর্মসংস্থানেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশের গৃহহীনদের ঘর দেয়ায় সহায়তা দিতে ইচ্ছুক তুরস্কের সরকারও। ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান গত ডিসেম্বরে এ ব্যাপারে আঙ্কারার আগ্রহের কথা জানান।
তুরান জানান, বাংলাদেশে গৃহহীন মানুষদের দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরি করে দিতে চায় তুরস্কের সরকার। তবে কতটি পরিবারকে তারা ঘর তৈরি করে দেবে সে বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত হয়নি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আগামী মার্চে এরদোয়ানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছে ঢাকা। ওই সফরের সময় গৃহহীনদের হাতে ঘর তুলে দেয়ার কথা তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধানের।
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের একটি বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় ঢাকা। তবে সম্প্রতি দুই দেশ কাছাকাছি এসেছে।
এরদোয়ান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের অর্থায়নে আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এবং বাংলাদেশে আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য বসবে।