বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলেও এ বিষয়ে তেমন কোনো আলাপ-আলোচনা নেই পাকিস্তানে। এমন অবস্থায় দেশটিকে টিকা সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছে চীন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুইং শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তাদের সরকার ইসলামাবাদকে উপহার হিসেবে কিছু টিকা দেবে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানে টিকা রপ্তানির প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে চীনের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে তাড়া দেবে।
এ বিষয়ে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে চুইং বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকেই অসুবিধাগুলো উত্তরণে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।
‘পাকিস্তানে আমাদের ভাই-বোনদের সহযোগিতা করতে তাদেরকে কিছু টিকা উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন সরকার; পাকিস্তানে চীনের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের টিকা রপ্তানি দ্রুততর করতেও সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। চীন সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে টেলিফোনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেছেন।’
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধুপ্রতীম ছয়টি দেশে ভারত উপহার হিসেবে করোনা প্রতিরোধী টিকা পাঠানো পর পাকিস্তানকে টিকা সহায়তা দেয়ার খবর দিল চীন।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত হচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা। ‘কোভিশিল্ড’ নামে এই টিকা উৎপাদন করছে তারা। বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে এই টিকার ২০ লাখ ডোজ দিয়েছে নয়াদিল্লি। এছাড়াও এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনে আনছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে ভারতের আগেই করোনা প্রতিরোধী টিকা উদ্ভাবন করেছে চীন। তবে ‘সিনোভ্যাক’ নামের এই টিকা নিয়ে ফাইজার, মডার্না বা অক্সফোর্ডের টিকার মতো তেমন কোনো আলোচনা নেই।
ভারত যখন বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোকে টিকা সহায়তা দিচ্ছে, তখন চীনও এ বিষয়ে তাদের বন্ধু দেশ পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলো।
তবে ইসলামাবাদকে তারা টিকার কী পরিমাণ ডোজ দেবে তা উল্লেখ করেননি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। এমনকি দেশটিতে চীনের কোন প্রতিষ্ঠান টিকা রপ্তানি করবে তাও বলা হয়নি।
এর আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি জানিয়েছিলেন, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তাদেরকে পাঁচ লাখ করোনা প্রতিরোধী টিকা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন।
পাকিস্তানের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ১১ হাজার দুইশ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যাটি বাংলাদেশ থেকে বেশি হলেও ভারত থেকে অনেক কম।
শনিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু ৮ হাজার ছাড়িয়েছে, ভারতে ছাড়িয়েছে এক লাখ ৫৩ হাজার।