রাশিয়ায় প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনির মুক্তির দাবিতে উত্তাল গোটা দেশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গণগ্রেপ্তারের পথ বেছে নিয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাজধানী মস্কোসহ সারা দেশে নাভালনির মুক্তির দাবিতে কয়েক হাজার মানুষ সড়কে বিক্ষোভ শুরু করে। গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে মস্কো, ভনুকভো, ইয়াকুটস্কসহ ৩০টি শহরে বিক্ষোভে নামেন কয়েক হাজার মানুষ। তাদের পুলিশ বাধা দিলে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষও হয়। আটক করা হয় নাভালনির প্রায় ২০০ সমর্থককে।
রাশিয়ার প্রধান বিরোধী দল রাশিয়া অফ দ্য ফিউচারের নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি। গত বছরের আগস্টে তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ওঠে।
নির্বাচনি প্রচার শেষে অভ্যন্তরীণ একটি ফ্লাইটে সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। কোমায় চলে যাওয়া নাভালনিকে রাখা হয় আইসিইউতে।
তবে সেখানে সঠিক চিকিৎসা পাবেননা এমন আশংকায় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপে জার্মানিতে চিকিৎসা নেন নাভালনি। কয়েকটি মামলা থাকায় ক্রেমলিনের অনুমতি নিয়ে বার্লিনে চিকিৎসা নিয়ে সম্প্রতি সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
জার্মান চিকিৎসকেরা জানান, নাভালনির ওপরে নভিচক নামে স্নায়ু বিকল করার বিষাক্ত এক রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় পুতিন সরকার জড়িত বলে দাবি করে আসছে নাভালনির দল ও পরিবার।
রাশিয়ায় প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সাই নাভালনি
জার্মানিতে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে গত সপ্তাহে দেশে ফেরেন নাভালনি। মস্কোর ভনুকভো বিমানবন্দরে নাভালনিকে বহনকারী বিমানের নামার কথা থাকলেও, সমর্থকদের ভিড়ের কারণে পরে শেরেমিতিয়েভো বিমানবন্দরে নামানো হয় তাকে।
সেখান থেকেই পুলিশি পাহারায় নাভালনিকে মস্কোর একটি থানায় নেয়া হয়। পরদিন সেই থানার ভেতর অস্থায়ী আদালত বসিয়ে প্যারোলের শর্ত ভঙের দায়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাভালনিকে আটক রাখার নির্দেশ দেয় বিচারক। সেই সঙ্গে নাভালনির সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা প্রশ্নে ২৯ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
এদিন ৭০ জনেরও বেশি সাংবাদিক ও নাভালনির সমর্থককে আটক করে পুলিশ। প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন অ্যালেক্সাই নাভালনি।