বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ও শাসক দলের দ্বিচারিতা

  •    
  • ২২ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:০০

একদিকে অমিত শাহের টুইটার অ্যাকাউন্ট সাময়িক বন্ধ করা নিয়ে বিজেপির শোরগোল, আরেকদিকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর আদেশ, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তিকর মন্তব্য করা যাবে না সোশ্যাল মিডিয়ায়।

একদিকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সুযোগ চাই, অন্যদিকে নেটনাগরিকদের সমালোচনা করার অধিকার কেড়ে নেয়া– এই দুই পরস্পরবিরোধী আচরণ শাসকদলের পদক্ষেপে।

ভারতের সংসদীয় কমিটি যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের টুইটার অ্যাকাউন্ট সাময়িক ব্লক করে দেয়ার জন্য টুইটার কর্তৃপক্ষকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছেন, তখনই বিজেপির শরিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার নির্দেশ দিলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তিজনক বা মানহানিকর পোস্ট করলে তা শাস্তিযোগ্য সাইবার অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। আর শুধুমাত্র সরকারের বিরুদ্ধেই নয়, সরকারি কর্মকর্তা বা কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই ধরনের পোস্ট করলেও শাস্তির মুখে পড়তে হবে নেটনাগরিকদের।

২০২০ সালের নভেম্বর মাসে আচমকাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয় টুইটার। সরিয়ে দেয়া হয় তার মূল ছবিটিও। যদিও অ্যাকাউন্ট আবার চালু করে দেয়া হয়। কিন্তু তা নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়েনি টুইটার কর্তৃপক্ষের।

বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সংসদীয় কমিটির সামনে জেরবার হতে হয় সংস্থার কর্মকর্তাদের। সংসদীয় কমিটির সামনে ডেকে পাঠানো হয় দুই সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট টুইটার ও ফেসবুকের কর্মকর্তাদের। যাবতীয় নীতিনিয়ম স্পষ্টভাবে জানাতে বলা হয়। সেখানেই শাহের অ্যাকাউন্টের প্রসঙ্গ উঠে আসে বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, শাসক দল বিজেপি থেকে যারা সংসদীয় কমিটিতে রয়েছেন, মূলত তাদেরই আক্রমণের মুখে পড়েন টুইটার কর্মকর্তারা। জবাবে টুইটার কর্মকর্তারা জানান, শাহের অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয়ার বিষয়টি একেবারেই ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ ছিল। তবে সেই সময় ‘ডিসপ্লে পিকচার’ অর্থাৎ প্রোফাইলের মূল ছবিটি নিয়ে কপিরাইট সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়ে। তাই ছবিটিও সরিয়ে দেয়া হয়।

টুইটারের সত্যাসত্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। জবাবে সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, ভার্চুয়াল দুনিয়াতেও সকলের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলতে চাইছেন তারা। কিন্তু তাদের এই জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার থেকে ফেসবুক বা টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের সমালোচকদের কড়া শাস্তি হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীতিশ। এ বিষয়ে বিহারের ইকোনমিক অফেন্সেস উইংয়ের আইজি নায়ার হাসনেন খানকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে কেউ আপত্তিজনক বা মানহানিকর কোনো পোস্ট করলে তা যেন রিপোর্ট করা হয়। পাশাপাশি, তাদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও নির্দেশ দেন তিনি।

নীতিশের নির্দেশ মেনে আইজি নায়ার হাসনেন রাজ্যের সব সচিবকে একটি চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘সরকার, সম্মানীয় মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিজনক বা মানহানিকর মন্তব্য করছেন কয়েক জন ব্যক্তি এবং কিছু সংস্থা। এই সব পোস্ট আইনবিরোধী এবং সাইবার অপরাধ বলে গণ্য হবে।’

প্ররোচনামূলক পোস্ট রুখতে সম্প্রতি একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে টুইটার, যে কারণে আমেরিকায় ক্যাপিটল হিলে হামলায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে ডনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টও সাময়িক ব্লক করে দেয় তারা। তাদের এই ‘সাহসী’ পদক্ষেপ একদিকে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছিল, তেমনই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্ট ব্লক করা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল তাদের। নাগরিকদের নিরাপত্তা, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ও ভার্চুয়াল দুনিয়ায় মহিলাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা সেই সময় জানায় টুইটার।

এ বিভাগের আরো খবর