ভারতে বিতর্কিত কৃষি আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্টের গঠিত কমিটির সবাই কৃষি আইনের পক্ষে বলে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। তারা বলছেন, বিভিন্ন সময় কৃষি আইনের পক্ষে লেখালেখি ও মন্তব্য করে আসছেন কমিটির চার সদস্যই, তাই তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না।
এক শুনানিতে সোমবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট কৃষি আইন তিনটির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে জানায় যতদিন পর্যন্ত আইনগুলোর বৈধতা প্রশ্নে সংশয় দূর হবে না, ততদিন কার্যকর হবে না নতুন আইন। আর এই সংশয় দূর করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। বিবদমান পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী দুই মাসের মধ্যে তারা আদালতে প্রতিবেদন দেবে।
সুপ্রিম কোর্টের গঠিত কমিটিতে আছেন ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন এবং অল ইন্ডিয়া কিষান কো অর্ডিনেশন কমিটির সভাপতি ভূপিন্দর সিং মান, কৃষি ও অর্থনীতিবিদ ড. প্রমোদ কুমার যোশি ও অশোক গুলাটি এবং শেতকারি সংগঠনের প্রধান অনীল ঘনওয়াত।
কৃষি আইন তিনটি পাসের পর অনিল ঘনওয়াত এগুলোর পক্ষে অনেক প্রতিবেদন লিখেছেন। আর অশোক গুলাটি ও প্রমোদ কুমারকে দেখা গেছে মিডিয়ায় ওই আইনগুলোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে। এছাড়া ভূপিন্দর সিং মানের নেতৃত্বে একদল কৃষক ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আইনগুলোর পক্ষে তাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন।
যৌথ মঞ্চের অন্যতম নেতা যোগেন্দ্র যাদব বলেন, ‘দফায় দফায় বৈঠক করে সরকার যে সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, এবার সেটা করার চেষ্টা হচ্ছে বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে। কমিটির চার জন সদস্যই নতুন কৃষি আইনের ঘোর সমর্থক ও প্রচারক। তাই এই কমিটির সঙ্গে আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনগুলো আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।’
তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র টুইটারে লিখেছেন, ‘আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যা বুঝলাম, দুই মাস অতিরিক্ত সময় পাওয়া গেল, যাতে কৃষকদের বাড়ি পাঠানো যায়, কোণঠাসা অবস্থা থেকে সরকারকে ফিরিয়ে আনা যায়। সরকার মনে করছে, এই সময়ে আন্দোলন গতি হারিয়ে ফেলবে।’
গত বছরের সেপ্টেম্বরে পাশ হওয়া বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে হাজার হাজার কৃষক প্রায় দুই মাস ধরে রাজধানী নয়াদিল্লির কাছে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। কৃষকদের অভিযোগ এসব আইনে তাদের ঠকানো হয়েছে।