‘নতুন কৃষি আইন ফিরিয়ে না নিলে আমরাও ফিরে যাব না’, শুক্রবার অষ্টম দফার আলোচনায় কেন্দ্রকে আবারও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন কৃষকরা।
আগের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়! তারপরই কৃষকরা পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিলেন, আইন বাতিল করা না হলে প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীতে বিশাল ট্র্যাক্টর মিছিল বের করবেন তারা। দুপক্ষের পরবর্তী বৈঠক আগামী ১৫ জানুয়ারি।
এর আগে আগামী ১১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে কৃষি আইনের বিরোধিতা করে দাখিল করা একটি আবেদনের ওপর শুনানি হবে।
শুক্রবার অষ্টম দফার বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষক নেতাদের বলা হয় ‘আপনারা সুপ্রিম কোর্টে চলতি মামলায় অংশ নিন। আদালত যে রায় দেবে সরকার তা বিবেচনা করবে।’
তবে সরকারের এই প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেন কৃষক নেতারা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, ‘আমরা আদালতে চলতি মামলায় অংশ নেব না। আমাদের দাবি দেশের নির্বাচিত সরকারের কাছে, যারা এই আইন তৈরি করেছে। কৃষকদের এই দাবিগুলো আদালতের বিষয় নয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকার তিনটি কৃষি আইন বাতিল না করলে আমরা সড়কেই বসে থাকব ,প্রয়োজনে সেখানেই মৃত্যুবরণ করব।’
এ দিনের বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেছেন, আজকের বৈঠকে কোনো সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। আমরা কৃষক নেতাদের বলেছি তিনটি আইন প্রত্যাহারের দাবির বিকল্প হিসেবে অন্য যে কোনও দাবি পেশ করলে সরকার তা ইতিবাচক দৃষ্টিতে বিবেচনা করবে। কিন্তু কৃষক নেতারা নিজেদের দাবিতে অনড় থাকায় আজ কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে দুই পক্ষের সম্মতিতে আগামী ১৫ জানুয়ারি আবার আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশা করছি ওই বৈঠকে সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে।
শুক্রবারের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়, নতুন কৃষি আইন শুধু পাঞ্জাব বা হরিয়ানার জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য আনা হয়েছে। কৃষকরাও পাল্টা জানান, আইন প্রত্যাহারের দাবি থেকে তাঁরা সরছেন না। তাদের বক্তব্য, শীর্ষ আদালত বহুবার রায় দিয়ে জানিয়েছে, কৃষিক্ষেত্র সম্পূর্ণ রাজ্যের বিষয়। কেন্দ্রের এই বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানো উচিত নয়।
বৈঠকে এক কৃষক নেতা বলেন, ‘এতদিন ধরে আলোচনা চলছে ঠিকই, কিন্তু আপনারা এই সমস্যার সমাধান চাইছেন না বলেই মনে হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে আমাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিন, আমরা চলে যাচ্ছি। কেন সবার সময় নষ্ট করছেন?’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সর্বভারতীয় কিসান সঙ্ঘর্ষ সমন্বয়ক কমিটির সদস্য কবিতা কুরুগান্তি। তিনি জানান, ‘সরকার আমাদের জানিয়েছে, তারা নতুন আইন প্রত্যাহার করতেই চায় না।’
শুক্রবার কৃষক আন্দোলন ৪৪তম দিনে পড়েছে।